শিগগিরই সরকার উৎখাতের কঠিন কর্মসূচি আসছে : অ্যাডভোকেট জয়নুল

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। ছবি : এনটিভি

‘বর্তমান সরকার এক তরফা নির্বাচন করে বেশি দিন টিকতে পারবে না। এ সরকারকে উৎখাত করতে শিগগিরই কঠিন কর্মসূচি আসছে। বিগত দিনে যে কর্মসূচি ছিল তার থেকে কঠিন ও তীব্র কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে’ বলে জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। আজ সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি গাজীপুরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

নাশকতা ও ভাঙচুর মামলার গ্রেপ্তার হয়ে কাশিমপুর কারাগারে মারা যাওয়া কাওরাইদ ইউনিয়ন বিএনপির ৬নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান হিরার বাড়িতে স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে আসেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির এই ভাইস চেয়ারম্যান।

অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচন ছিল ডামি নির্বাচন। এই নির্বাচন সারা বাংলাদেশের মানুষ, সারা বিশ্বের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। অত্যাচারী সরকার পৃথিবীর কোনো দেশেই টিকে থাকতে পারে নাই। এই সরকার যেহেতু অত্যাচারী হয়ে গেছে এবং এক তরফাভাবে নির্বাচন করেছে আমরা মনে করি এই সরকারও বেশি দিন টিকতে পারবে না।’

অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান কয়েক হাজার মাইল দূরে আছেন। সেখান থেকেও আপনাদের খবর নিয়েছেন। কোন জেলায় কে মারা গেছেন। গাজীপুরে যে দুজন মারা গেছেন সেটাও তার কাছে খবর আছে। এ ছাড়া দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন—সেই খোঁজ-খবরও তিনি রাখছেন। সরকারের কাস্টডিতে যখন কোনো লোক মারা যায় তখন সে দায়িত্ব হলো সরকারের। জেলখানায় যদি কেউ মারা যায় সেই দায়িত্ব হলো সরকারের এবং জেল কর্তৃপক্ষের। তারা সেই দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে।

মার্কিন প্রতিনিধি এসে বিএনপির মহাসচির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে ডেকে নিয়ে অনেক ধরনের কথা বলেছেন। যা আমার বলা ঠিক হবে না। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই নয়, পশ্চিমা দেশের যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তারা সবাই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু সেই রকম নির্বাচন বাংলাদেশে হয়নি। বাংলাদেশের মানুষও দেখেছে যে ৯৫ ভাগ লোক ভোট দিতে যায়নি। কাজেই এই নির্বাচন পৃথিবীর কারো কাছেই গ্রহণযোগ্য নয়, বাংলাদেশের মানুষের কাছে তো মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।

এর আগে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন কারাগারে মারা যাওয়া আসাদুজ্জামান খান হিরার কবর জিয়ারত করেন। তিনি বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান হিরার মা হালিমা সুলতানা, স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা, তিন ছেলে মেহেদি হাসান অনিক, জুনায়েদ হাসান অভি, রেদোয়ান হাসান রিজভীসহ পরিবারের অন্য স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন, সান্ত্বনা দেন এবং পাশে থাকার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহকারী স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা. রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ রিয়াজুল হান্নান, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র সদস্য ওমর ফারুক সাফিন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহজাহান ফকির ও সাধারণ সম্পাদক মো. আক্তারুল আলম মাস্টার, জেলা বিএনপির সহসভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম, শ্রীপুর পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মারুফ শেখ, সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন বেপারী, শ্রীপুর উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান টিটু, বিএনপিনেতা মোক্তারুল করিম শামীম মোড়ল, গাজীপুর জেলা কৃষকদলের আহ্বায়ক এস এম আবুল কালাম আজাদসহ বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।

গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশে গিয়েছিলেন হিরা খান। সমাবেশ থেকে ফেরার সময় সন্ধ্যায় শ্রীপুর রেল স্টেশন এলাকা থেকে তাঁকে আটক করে থানা পুলিশ। পরে শ্রীপুর থানার নাশকতা ও ভাঙচুর মামলার আসামি দেখিয়ে আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তারপর থেকে আদালতে একাধিকবার জামিন চেয়েও পাননি তিনি। ওই বছরের ১ ডিসেম্বর (শুক্রবার) কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি থাকাবস্থায় বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।