বেইলি রোডের অগ্নিকাণ্ডে আওয়ামী লীগনেতা শামীমের মৃত্যু
রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেষ্টুরেন্টে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আওয়ামী লীগনেতা ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আতাউর রহমান শামীম মারা গেছেন। তাঁর ভাগনে তারেক হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত আতাউর রহমান শামীমের বাড়ি মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে নিজ গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে।
অ্যাডভোকেট শামীমের সঙ্গে থাকা নূরুল আলম জানান, দুর্ঘটনার কিছু সময় আগে তাঁরা দুজন একসঙ্গে পুরানাপল্টনের হোটেল ক্যাপিটেল থেকে কাচ্চি ভাই রেস্টুরেন্টে কফি খেতে যান।
ওই রেস্টুরেন্টে অবস্থান নেওয়ার মাত্র পাঁচ মিনিটের মাথায় রেস্টুরেন্টের নিচের দিকে কালো ধোঁয়াসহ কয়েকটি আওয়াজ শুনতে পান। তখন আতাউর রহমান শামীম উঁকি মেরে ধোঁয়া দেখতে পান। এরপর তারা প্রথমে নিচে নামার চেষ্টা করেন। কিন্তু কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলীতে কিছু না দেখায় সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে থাকেন। এ সময় ভিড়ে আতাউর রহমান শামীমকে আর দেখতে পাননি নূরুল আলম। হেলিপ্যাডের মাধ্যমে তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও অ্যাডভোকেট শামীম অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান।
নিহত আতাউর রহমান শামীমের পরিবার যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি তাঁর স্ত্রী ও এক কন্যা সন্তান নিয়ে দেশে ফিরেন। আগামী রোববার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তাঁর যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার কথা ছিল।
আতাউর রহমান শামীমের জানাজা আজ শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টায় কুলাউড়া নবীন চন্দ্র সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে মাঠে ও দ্বিতীয় জানাজা বাদ মাগরিব তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হবে। এরপর তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান শামীম রাজনৈতিক জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা দপ্তর সম্পাদক ও কুলাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি ২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে মৌলভীবাজার-২ (কুলাউড়া) আসনে মহাজোটের নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে দগ্ধ হয়ে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছে অন্তত ২২ জন। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের দুই ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে। ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে উদ্ধারকাজে সহায়তা করে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য, এনএসআই, বিজিবি ও র্যাব।