গাছের ডালে ঝুলিয়ে কিশোরকে নির্যাতন, মূল হোতা গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় কিশোরকে গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধরের মূল হোতা মো. জামির। ছবি : এনটিভি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় দিদার হোসেন (১৪) নামের কিশোরের এক পা গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধরের মূল হোতা মো. জামিরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার দিনগত (১ মার্চ) রাতে উপজেলার আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জামির গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে গাছের ডালে এক পা বেঁধে ঝুলিয়ে রেখে দিদার হোসেনকে মারধর করে এবং তার পরিবারের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করে।

অভিযুক্ত জামির উপজেলার চরচালতলা এলাকার বোমা কুদ্দুস মিয়ার ছেলে। আশুগঞ্জ থানায় তার নামে ৮টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকালে একই এলাকার চরচারতলা গ্রামের ল্যাংটার ব্রয়লারের সামনে তোফাজ্জলের কাছে নৌকার কাজের পাওনা টাকা চাইতে গেলে দিদারের সঙ্গে তোফাজ্জলের বাকবিতণ্ডা হয়। পরে দুপুরে দিদার বাড়ি থেকে রাস্তায় বের হলে একই এলাকার জামির (৪০), তোফাজ্জল (২৮), মাসুদ (৩৮), শাকিল (৩০), আকাশ (৩০) ও নাসির (৪০) দিদারকে ধরে নিয়ে যায়। পরে দিদারকে মিডল্যান্ড পাওয়ার প্লান্টের পাশে নিউ এশিয়া প্রজেক্টের খালি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর সেখানে একটি কড়ই গাছের ডালে দিদারের ডান পায়ে দড়ি বেঁধে ঝুলিয়ে জামিরসহ অন্যরা মোটা রশি দিয়ে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।

এরপর দিদারের মাকে মাসুদের মোবাইলফান দিয়ে কল করে তার ছেলেকে ২ লাখ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে বলা হয়। এসময় দিদারের মা আশপাশের প্রতিবেশিদের নিয়ে দৌড়ে ছেলেকে উদ্ধার করতে যায়। সেখানে গিয়ে সে তার ছেলেকে গাছ থেকে নামিয়ে আনার জন্য সবার পায়ে ধরে অনুরোধ করে। টাকা না দিলে দিদারকে নামানো হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেয় তারা। পরে দিদারের মা টাকা দিতে রাজি হলে দিদারকে গাছ থেকে নামিয়ে আনা হয়। দিদারের মা বাসায় এসে আশপাশের লোকের কাছ থেকে ধার দেনা করে ৩০ হাজার টাকা জামির ও তোফাজ্জলের কাছে দেয়। জামির, তোফাজ্জল, মাসুদ, শাকিল, আকাশ ও নাসিরসহ সবাই এই বিষয়ে কাউকে না জানানোর জন্য হুমকি দেয়। এই ঘটনায় দিদারের বাবা বাদী হয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি সকালে আশুগঞ্জ থানায় জামিরসহ আরও কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।

আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাহিদ আহমেদ বলেন, দিদারের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা পেয়ে আমরা আসামিদের ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাই। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে অভিযান চালাই। সেখান থেকে মূল হোতা জামিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার সকালে জামিরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। জামিরের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ থানায় মোট ৮টি মামলা রয়েছে। মামলাগুলো আদালতে বিচারাধীন। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে।