বিএনপিনেতা হাবিবের লিভ টু আপিল খারিজ, দণ্ড বহাল

হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় আদালত অবমাননার মামলায় পাঁচ মাসের দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবের লিভ টু আপিল খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আজ রোববার (৩ মার্চ) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ফলে হাবিবুর রহমান হাবিবকে পাঁচ মাস দণ্ড খাটতে হবে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
গত বছরের ২২ নভেম্বর বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর বেঞ্চ তাকে পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দেন। একইসঙ্গে তাকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। একইদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে তলবে হাজির না হওয়ায় গত ৮ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিবকে খুঁজে বের করে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ অবস্থায় ২১ নভেম্বর মিরপুরের ডিওএইচএস এলাকা থেকে র্যাব-২ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন হাইকোর্টে হাজির করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই বক্তব্য উপস্থাপনের পর গত ১৫ অক্টোবর হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ ৬ নভেম্বর হাবিবুর রহমানকে তলব করেন। কিন্তু ৬ নভেম্বর তিনি বা তার কোনো প্রতিনিধি আদালতে হাজির হননি। ওইদিন সংশ্লিষ্ট পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ৮ নভেম্বর তার অবস্থান জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
৮ নভেম্বর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান বলেন, স্থায়ী ঠিকানায় খোঁজ করে পাবনা পুলিশ সুপার জানিয়েছেন ওনার (হাবিব) বাড়ি তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। ওনাকে পাওয়া যায়নি। আর ঢাকার শেরে বাংলা নগর থানা থেকে জানিয়েছে, ওনার বাসায় একাধিকবার পুলিশ গিয়েছে ওনাকে পাওয়া যায়নি। পুলিশকে ওনার স্ত্রী জানিয়েছেন- হাবিবুর রহমান হাবিব কোথায় আছেন তিনি তা জানেন না। অর্থাৎ তিনি এখন পলাতক অবস্থায় আছেন। সে বিষয় প্রতিবেদন আকারে আদালতকে জানিয়েছি।
এ প্রতিবেদন দাখিলের পর হাবিবুর রহমান হাবিবকে ট্রেস আউট করে অবিলম্বে আদালতে হাজিরের জন্য পুলিশ মহাপরিদর্শকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন। বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামান বিচারিক আদালতে জজ থাকা অবস্থায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সাজা দিয়েছিলেন তিনি। পরে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান।
গত ১৫ অক্টোবর ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল ইসলাম জানিয়েছিলেন, বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবের বক্তব্যের লিংক ইউটিউবে প্রচারিত হতে থাকলে সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়। বিষয়টি হাইকোর্ট বেঞ্চের কার্যতালিকায় উত্থাপিত হয়। শুনানি শেষে হাইকোর্ট বিভাগ হাবিবুর রহমান হাবিবের বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার দায়ে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে ব্যাখ্যা দিতে তলব করা হয়েছে ৬ নভেম্বর।