বেইলি রোড ট্র্যাজিডি : স্ত্রী-সন্তানসহ শুল্ক কর্মকর্তার দাফন সম্পন্ন

Looks like you've blocked notifications!
নারায়ণগঞ্জ জেলার পানগাঁও কাস্টমস অফিসের কর্মকর্তা শাহ জালাল উদ্দিন, স্ত্রী মেহেরুন নিসা এবং চার বছরের শিশুকন্যা ফাইরুজ কাশেম জামিরা। ছবি : এনটিভি

রাজধানীর বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহত শুল্ক কর্মকর্তা শাহ জালাল উদ্দিন, স্ত্রী মেহেরুন নিসা এবং চার বছরের শিশুকন্যা ফাইরুজ কাশেম জামিরাকে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে ।

আজ রোববার (৩ মার্চ) দুপুর ১২টায় মরিচ্যা মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা শেষে স্থানীয় মসজিদ সংলগ্ন পারিবারিক কবরস্থানে তিনজনকে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়। 

জানাজায় ঢল নামে এলাকাবাসীসহ শোকার্ত মানুষের।

জানাজার আগে নিহতদের জীবন ও কর্ম নিয়ে স্মৃতিচারণা করেন নিহত শাহ জালালের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, উখিয়া-টেকনাফের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, ঝিলংজা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান টিপু সুলতান, হলদিয়া পালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েসসহ স্থানীয় আওয়ামী ও পরিবারের সদস্যরা।

সকাল থেকে দূর-দূরান্ত থেকে তাঁদের এক নজরে দেখতে ছুটে আসেন হাজারো মানুষ। মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে চলে স্বজনদের আহাজারি।

এর আগে শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শাহজালালের স্ত্রী মেহেরুন নিসার রামুর গ্রামের বাড়ি ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নে পৌঁছায় তাদের মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স। তাদের মরদেহ কক্সবাজার পৌঁছার পর সৃষ্টি হয় হৃদয়বিদারক দৃশ্য। রাত সাড়ে ১১টায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম জানাজা। এরপর মরদেহ নেওয়া হয় শাহজালালের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারের হলদিয়াপালংয়ে।

কাস্টমস ইন্সপেক্টর শাহ জালাল উদ্দিন নারায়ণগঞ্জ জেলার পানগাঁও কাস্টমস অফিসে কর্মরত ছিলেন। টানা তিনি দিনের ছুটি পাওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে খাগড়াছড়ি ভ্রমণের কথা ছিল। কিন্তু সেখানে রওনা দেওয়ার আগে তাঁরা বেইলি রোডের কাচ্চি ভাই রেঁস্তোরায় খেতে গিয়ে সন্তানসহ পুড়ে মারা যান। 

অগ্নিকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা অতিবাহিত হওয়ার পরও তাদের মরদেহ অজ্ঞাত হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পড়েছিল। পরে শুক্রবার রাতে তাদের তিনজনের মরদেহ শনাক্ত করেন স্বজনরা।

গত বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে রাজধানীর বেইলি রোডের একটি বহুতল ভবনে আগুন লাগে। এতে দগ্ধ হয়ে ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়েছে অন্তত ২২ জন। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের দুই ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৭৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করেছে। ঘটনা তদন্তে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগুনের ঘটনায় ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে উদ্ধারকাজে সহায়তা করে পুলিশ, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য, এনএসআই, বিজিবি ও র‌্যাব।