বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অংশীদারিত্বে রূপান্তরে গুরুত্বারোপ ইউএইর
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে অংশীদারিত্বে রূপান্তরে জোর দিয়েছেন। দেশটির রাজধানী আবুধাবির আল আইন শহরে মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহর রাজকীয় প্রাসাদে স্থানীয় সময় শুক্রবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের জন্য কম্প্রিহেনসিভ ইকনোমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট (সিইপিএ) সই ও জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল (জেবিসি) সক্রিয় করার প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে এ গুরুত্বারোপ করেন।
সোয়া এক ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকের শুরুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণপত্রটি ইউএইর পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহকে হস্তান্তর করেন।
এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান বাংলাদেশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাত দুই জাতির প্রতিষ্ঠাতা পিতাদের প্রতিষ্ঠিত দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের ঐতিহাসিক বন্ধনের কথা স্মরণ করে গত ৫ দশকে ইউএইর অভূতপূর্ব অগ্রগতির জন্য দেশটির নেতৃত্বের প্রশংসা করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অসামান্য অর্জনগুলো তুলে ধরেন।
উভয় মন্ত্রী বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার পুরো বিষয় পর্যালোচনাকালে জ্বালানি নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধিসহ নতুন উদীয়মান ক্ষেত্র অন্বেষণের ওপর জোর দেন।
ড. হাছান দেশে ইউএইর বিনিয়োগ বৃদ্ধিকল্পে মাতারবাড়ি এক্সক্লুসিভ ইকনোমিক জোন, বন্দর ও লজিস্টিক ব্যবস্থাপনা, চট্টগ্রামে হাছান মাহমুদের নিজ এলাকা রাঙ্গুনিয়ায় আধুনিক ইউএইর প্রতিষ্ঠাতা শেখ জায়েদ ইবনে সুলতান আল নাহিয়ানকে উপহার দেওয়া জমির উন্নয়নে সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার এবং ব্যবসায়ীদের জন্য সম্ভাব্য বিনিয়োগ প্রস্তাব তুলে ধরলে ইউএইর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমর্থনে চলমান বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোকে এগিয়ে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
দুই নেতা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন এবং চলমান গাজা যুদ্ধ বন্ধের উদ্যোগসহ নানা আঞ্চলিক বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান ইউএইতে স্নাতক নার্স, কেয়ারগিভার, স্বাস্থ্যসেবা টেকনিশিয়ান, কৃষিবিদ, কৃষক ও বিভিন্ন পেশাজীবীসহ সব ট্রেডে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা পদ্ধতি সহজ করা এবং এক নিয়োগকর্তার কাছ থেকে অন্য নিয়োগকর্তার কাছে ওয়ার্ক পারমিট স্থানান্তর সহজীকরণের অনুরোধ জানালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ ইতিবাচক সাড়া দেন।
সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম এশিয়া শাখার মহাপরিচালক মো. শফিকুর রহমান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।