জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান রওশন, মহাসচিব কাজী মামুনুর রশীদ

Looks like you've blocked notifications!
আজ শনিবার জাতীয় পার্টির দশম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে নেতৃবৃন্দ। ছবি : এনটিভি

আগামী তিন বছরের জন্য জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন রওশন এরশাদ। আজ শনিবার (৯ মার্চ) দশম জাতীয় কাউন্সিলে তার নাম ঘোষণা করা হয়। কাউন্সিলে আগামী তিন বছরের জন্য জাতীয় পার্টির মহাসচিব নির্বাচিত হয়েছেন কাজী মামুনুর রশীদ। নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ এবং সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ছাড়া পাঁচজনকে কো-চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে। তারা হলেন—শাহিদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, সাদ এরশাদ, গোলাম সারওয়ার মিলন, সুনীল শুভ রায়। এদের মধ্যে সুনীল শুভ রায় জাতীয় পার্টির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করবেন।

সম্মেলনে এরশাদের ছেলে রাহগির আল মাহি এরশাদ ওরফে সাদ এরশাদকে দলের অন্যতম কো-চেয়ারম্যান করা হয়। রওশনের অবর্তমানে সাদ দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবে বলেও সম্মেলনে ঘোষণা দেওয়া হয়।

এর আগে আজ শনিবার (৯ মার্চ) জাতীয় সংগীত এবং দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দুপুর ১২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে শোক প্রস্তাব পাঠ করেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মৃধা।

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে পুরো ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটসহ মৎস্যভবন ও শাহবাগ এলাকা। নানা রংবেরঙের পোস্টার, ফেস্টুন ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে সম্মেলনস্থল। সড়কদ্বীপগুলোতে লাগানো হয়েছে এরশাদ শাসনামলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ছবি সম্বলিত ফেস্টুন। নির্মাণ করা হয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট মঞ্চ। ১২ হাজার কাউন্সিলর এবং ডেলিগেট উপস্থিতির লক্ষ্য চুড়ান্ত করে সম্পন্ন করা হয়েছে সকল আয়োজন। 

১৯৮৬ সালের ১ জানুয়ারি জাতীয় পার্টির যাত্রা শুরু হয়। এরপর নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে অন্তত ছয় ভাগে বিভক্ত হয়েছে দলটি। তারপর থেকে এরশাদ-রওশন ও জিএম কাদের বলয়কেই জাপার মূল ধারা হিসেবে বিবেচনা করা হতো। সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাশাসক এরশাদের মৃত্যুর পর থেকেই নেতৃত্ব নিয়ে রওশন, জি এম কাদের অর্থাৎ দেবর-ভাবির মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। 

গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কোন্দলের মাত্রা চরমে ওঠে। নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা সরাসরি পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর বিরুদ্ধে মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে সভা ডেকে ফল বিপর্যয়ের জন্য দোষারোপ করেন। তাদের পদত্যাগও চান পরাজিত প্রার্থীদের অনেকেই। এ ঘটনা কেন্দ্র করে দলে থাকা দীর্ঘদিনের মিত্রদের একে একে বহিষ্কার করেন জি এম কাদের।

গত ২৮ জানুয়ারি জিএম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে জাপার স্বঘোষিত চেয়ারম্যান হন রওশন এরশাদ। মূলত রওশন অংশে তিনি ছাড়া বাকি শীর্ষ নেতাদের সবাই দল থেকে বহিষ্কৃত। বহিষ্কৃত নেতাদের হাতে নিয়েই নতুন করে দল গঠন করতে যাচ্ছেন সাবেক এই বিরোধী দলের নেতা। যদিও দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে এখনও বহাল আছেন রওশন এরশাদ।