ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য ব্যর্থতা আড়ালে সরকারের অপকৌশল : রিজভী

Looks like you've blocked notifications!
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী গতকাল শুক্রবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন। ছবি : বিএনপি মিডিয়া সেল

দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতি নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য ‘সরকারের ব্যর্থতা আড়ালে ধূম্রজাল সৃষ্টির অপকৌশল’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। গতকাল শুক্রবার (১৫ মার্চ) নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি  এই মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘পুলিশ আপনাদের, র‌্যাব আপনাদের, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আপনাদের, নিরাপত্তা বাহিনী আপনাদের আর আপনি (ওবায়দুল কাদের) বলছেন যে, বিএনপি নাকি সিন্ডিকেটের সাথে জড়িত। ওবায়দুল কাদের সাহেব… আপনি যতই চিৎকার করেন, দেশবাসীর কাছে এটি প্রমাণিত যে, আওয়ামী লীগ সরকারের অপর নাম সিন্ডিকেট আর লুটপাট।’

রিজভী বলেন, ‘আপনি (ওবায়দুল কাদের) এসব কথা বলে … এখন যে দ্রব্যমূল্য হু হু করে বাড়ছে, নিম্ন আয়ের মানুষ একেবারে রাস্তার মধ্যে ধুলার মধ্যে মিশে গেছে। আপনি এগুলো আড়াল করতে চান এসব কথা-বার্তা বলে… ধূম্রজ্বাল সৃষ্টি করে এতে কোনো লাভ হবে না। জনগণ সবই জানে, জনগণ সবই দেখছে।’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ‘বিএনপির নেতারা তো কেবল জেলখানা থেকে বেরুচ্ছেন, এখনো শত শত নেতা-কর্মী কারাগারে। আর সিন্ডিকেটের মতো এরকম প্রভাবশালী চক্র এটা যে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া হয় না… এটা শুধু বাংলাদেশ না গোটা পৃথিবীতে প্রমাণিত। কারণ একটা পৃষ্ঠাপোষকতা লাগে… ক্ষমতার একটা ছায়া লাগে… তখনই সিন্ডিকেটবাজরা দুরন্ত গতিতে ছুটতে থাকে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘মানুষ কাতরাচ্ছে ক্ষুধায়, মানুষ কাতরাচ্ছে বিশুদ্ধ পানির জন্য, মানুষ কাতরাচ্ছে কোনো রকমে বেঁচে থাকার জন্য। এই কাতরানি আপনারা শুনতে পাচ্ছেন না। আপনারা ক্ষমতার মসনদের ঝাড়বাতির আলোর মধ্যে আছেন তো… তা্ই মানুষের হৃদয়ের মধ্যে যে অন্ধকার পড়েছে এই অন্ধকার আপনারা দেখতে পারছেন না।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে দলের সাধারণ সম্পাদক সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এই ধরনের (দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতি) অপকর্মের সাথে বিএনপির সম্পৃক্ততা আছে। তারাই (বিএনপি) সিন্ডিকেট করে সরকারকে বিব্রত করা এবং নির্বাচিত সরকারের যে অগ্রযাত্রা তা বাধাগ্রস্ত করার জন্য- তারা চেষ্টা করতে পারে। এটা আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে। এই যে সিন্ডিকেট, এই সিন্ডিকেটের সাথে বিরোধী দল বিএনপির সাথে সংযোগ আছে কি না… তা খতিয়ে দেখতে হবে।’

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইফতার মাহফিলে হামলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, ‘কোনো কিছু সামাল দিতে না পেরে সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এখন ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ইফতার ভাঙ্গার কর্মসূচিতে। যখনই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখনই তারা মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস, সংস্কৃতির ওপর আঘাত হানে এবং আলেম সমাজের ওপর নিপীড়ণ নেমে আসে। এর কারণ প্রভুদেরকে খুশি করা।’

রিজভী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সভা ও সবধরণের অনুষ্ঠান বিদ্যমান রয়েছে। এসব অনুষ্ঠান ওবায়দুল কাদের, হাছান মাহমুদ সাহেবদের সাড়ম্বর উপস্থিতি দেখা যাচ্ছে অথচ ইফতার মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা ও হামলা এটা কি গভীর চক্রান্তের অংশ? মুসলমানদের কোনো ধর্মীয় অনুষ্ঠান করতে গেলে ওবায়দুল কাদের সাহেবদের গা জ্বালা করার অর্থ কি? আওয়ামী লীগ তাদের স্বার্থে কখনো ইসলামকে ব্যবহার করে, আবার কখনো ছুঁড়ে ফেলে দেয়। দেশবাসী ভোট-পার্লামেন্ট হারিয়েছে, গণতন্ত্র ও আইনের শাসন হারিয়েছে, শেষমেষ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানরা নিজেদের সংস্কৃতি ও মূল্যবোধও হারাতে বসেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী ও অধ্যাপক মামুন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।