কুমিল্লায়  ৫ টাকা কেজি দরেও বেগুন বিক্রি করতে পারছেন না চাষীরা

Looks like you've blocked notifications!
কুমিল্লায় বেগুন বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠে আসছে না কৃষকের। ছবি : এনটিভি

কুমিল্লার বাজারে শিংনাথ বেগুন প্রতি কেজি  ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হলেও উৎপাদনকারী কৃষকরা ৫ টাকা কেজিতেও বেগুন বিক্রি করতে পারছেন না। কেউ কেউ বাজারে যে পরিমাণ বেগুন নিয়ে যান তা বিক্রি করে গাড়ি ভাড়াও যোগাড় করতে পারেন না৷ হতাশায় কৃষকরা আগামীতে বেগুন চাষ করবেন না বলে জানিয়েছেন। এমন অবস্থা দেখা গেছে কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার মিথলমা ও পার্শ্ববর্তী দেবিদ্বার উপজেলার ব্রাহ্মণখাড়া এলাকাতে। 

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মিথলমা এলাকার কৃষক মিজানুর  রহমান চলতি মৌসুমে  ৩৬ শতক জমিতে শিংনাথ বেগুন চাষ করেছেন। গাছে ফলন ভালো হয়েছে। ৩৬ শতক জমিতে বেগুন চাষ করতে তার অন্তত দু' লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ভালো ফলনে স্বপ্ন দেখেছেন ভালো মুনাফার। তবে বাজারে দালালদের দৌরাত্মের কারণে তিনি দাম পাচ্ছেন না। নিমসারসহ বিভিন্ন বাজারে  প্রতি কেজি বেগুন ৫ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করতে পারছেন না। 

মিজানুর জানান, এ সপ্তাহে তিনি একশ কেজি বেগুন নিয়ে বাজারে যান। বহু অনুরোধ করে  ৫ টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করেন। একশ কেজি  বেগুন ৫০০ টাকায় বিক্রি করেন। তার এ টাকা কৃষি শ্রমিকের মজুরি, গাড়ি ভাড়া দিয়ে শেষ হয়ে যায়। 

মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি বেগুন চাষ করে যে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি আগামীতে আর বেগুন চাষক করব না।’ তিনি আরও জানান, পাশের বাড়ির আরেক ভাই দুই টাকা কেজি দরে বেগুন বিক্রি করেছেন। 

দেবিদ্বার উপজেলার ব্রাহ্মনখাড়া গ্রামের সায়েদ আলী জানান, তিনি ৩৬ শতক জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। বাজারে নিয়ে ৪ থেকে ৫ টাকা কেজিতে বেগুন বিক্রি করতে হয়। এতে  কৃষি শ্রমিক, সার, বীজসহ যেসব খরচ হয়েছে বেগুন বিক্রি করে তার অর্ধেক খরচও উঠে আসবে না।

বিষয়টি নিয়ে কুমিল্লা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আছাদুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষকের স্বার্থ রক্ষায় সরকার এখন কৃষি শেড তৈরি করছে, যেখানে কৃষকরা ন্যায্য মূল্যে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করতে পারেন। এই কার্যক্রম যখন বাস্তবায়িত হবে তখন কৃষকরা উপকৃত হবেন। মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে। এছাড়াও আমরা সব সময় কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকি তারা যখন কৃষিপণ্য বিক্রয় করবেন তারা যেন তাদের মোবাইল ফোন নম্বরটাও দিয়ে দেন। এতে করে আমরা যখন অভিযান পরিচালনা করব তখন কৃষকদের ফোন করে যেন বিক্রি করা ফসলের সঠিক দামটা জানতে পারি।’