যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কেএনএফের গোলাগুলি, রুমা-থানচিতে থমথমে অবস্থা

Looks like you've blocked notifications!
বান্দরবান জেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটির সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন শান্তি রক্ষা কমিটির সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। ছবি : এনটিভি

বান্দরবানের রুমা-থানচিতে ব্যাংক লুটের ঘটনায় জেলাজুড়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে কেএনএফের সঙ্গে যৌথবাহিনীর মুন্নমপাড়া, আত্তাপাড়া সীমান্তবর্তী এলাকায় কয়েক দফা গোলাগুলি হয়েছে।

আজ সকালে সোনালী ব্যাংকের এমডি আফজাল করীম এবং সকালে চট্টগ্রাম রেঞ্জের  ডিআইজি নুরে আলম মিনা রুমা ও থানচিতে ব্যাংক লুটের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) নেছার উদ্দিন আহমেদ, জেলার  অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাযেমী, থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

পরিদর্শনকালে চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা বলেন,  অপরাধী যেই হোক, তারা কোনো ধরনের ছাড় পাবে না। তিন পার্বত্য জেলার মধ্যে বান্দরবান ছিল একটি অসম্প্রদায়িক চেতনা এবং  সম্প্রীতির জেলা হিসেবে পরিচিত। অপরাধীদের ধরতে চিরুনি অভিযান চালাতে প্রস্তুত যৌথ বাহিনী। তিন পার্বত্য অঞ্চলের কয়েকটি উপজেলা বর্তমান সময়ের খুবই ঝুঁকিপুর্ণ  হয়ে দাঁড়িয়েছে। আইনশৃঙ্খলা ঝুঁকি কমাতে  কয়েকটি উপজেলায় আরও দক্ষ জনবল মোতায়েন করা হবে। ফিল্মি স্টাইলে সরকারি সংরক্ষিত ব্যাংকে প্রবেশ করে হামলা, ডাকাতি, লুট করার বিষয়টি মেনে নেওয়া যায় না। অন্তত তিনটি মামলার মাধ্যমে যারা অপরাধী তাদের আইনের আওতা আনা হবে।

ডিআইজি নুরে আলম মিনা আরও বলেন, আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ভ্রমণ পিপাসুরা নির্বিঘ্নে থানচি উপজেলায় পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে ভ্রমণে আসতে পারে সে বিষয়ের প্রশাসন সজাগ এবং কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

অপরদিকে কেএনএফের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের কনফারেন্স রুমে আজ সকালে কেএনএফের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা কমিটি’র এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

এতে সভাপতিত্ব করেন শান্তি রক্ষা কমিটির সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা।

এ সময় শান্তি কমিটির মুখপাত্র কাঞ্চনজয় তঞ্চঙ্গ্যা, সদস্য লালসাম বম, লেলুংখুমী, উজ্জ্বল তঞ্চঙ্গ্যাসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলেনে ক্যশৈহ্লা বলেন, কেএনএফ  শান্তি আলোচনা শর্তভঙ্গ করেছে। অবৈধ অস্ত্র জমা দিয়ে শান্তির পথে ফেরার শর্তে একমত পোষণ করছে না। শর্ত লঙ্ঘন করায় কেএনএফের সঙ্গে  আলোচনা ও যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শান্তি রক্ষা কমিটি। চলতি মাসের ২২ এপ্রিল কেএনএফের সঙ্গে মুখোমুখি সংলাপ হওয়ার কথাছিল, সেটিও বাতিল করা হয়েছে। তবে পাহাড়ের সহজসরল সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় শান্তি কমিটির কার্যক্রম চালু থাকবে।

এদিকে ব্যাংক ও অস্ত্র লুট এবং অপহৃত ম্যানেজারের খোঁজে সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। অভিযানে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের রুমা উপজেলার দূর্গম মুন্নমপাড়া ও আত্তাপাড়া এলাকায় কয়েক দফা গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে। 

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীল কয়েকজন বলেন, কেএনএফ সশস্ত্র সংগঠনের মূলঘাটি হলো রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো। কেএনএফের সঙ্গে মুন্নমপাড়া, আত্তাপাড়া সীমান্তবর্তী এলাকায় আজ বিকেলে কয়েক দফায় গোলাগুলি হয়েছে। লুটকারী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে যৌথ বাহিনী সাঁড়াশি অভিযান চালাচ্ছে।