বৈসাবি উৎসবে নদীতে ফুল ভাসালেন চাকমা-তঞ্চঙ্গ্যা তরুণ-তরুণীরা

Looks like you've blocked notifications!
বৈসাবি উৎসবে শঙ্কামুক্ত, সুখ, সমৃদ্ধ ও মঙ্গলময় পৃথিবী কামনায় বান্দরবানের বালাঘাটা এলাকায় সাঙ্গু নদীতে ফুল ভাসাচ্ছেন চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা। ছবি : এনটিভি

পাহাড়ে বৈসাবি উৎসবের রং লেগেছে। শঙ্কামুক্ত এবং সুখ সমৃদ্ধ মঙ্গলময় পৃথিবী কামনায় আজ শুক্রবার (১২ এপ্রিল) বান্দরবানের বালাঘাটা এলাকায় সাঙ্গু নদীচরে ফুল ভাসালেন চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা।

শিশু কিশোর, যু্বক, যুবতীরা ভিড় জমিয়েছিল এই বিজু ও বৈসু আনন্দ আয়োজনে। 

আয়োজকরা জানায়, নতুন বছরকে বরণ এবং পুরোনো বছরকে বিদায় জানানোর সামাজিক এই উৎসবকে চাকমা সম্প্রদায় বিজু এবং তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় বৈসু নামে পালন করে আসছে যুগযুগ ধরে।

এবার তিন দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে বান্দরবান জেলার পাহাড়ি পল্লীগুলোতে।  উৎসবের প্রথমদিনে পার্বত্য চট্টগ্রামের চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা জনগোষ্ঠীর তরুণ-তরুণীরা ভোর বেলায় ঘুম থেকে উঠে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ফুল সংগ্রহ করে। এরপর ফুলের একটি অংশ মন্দিরে গৌতম বুদ্ধের প্রার্থনায় ব্যবহার করে। ফুলের আরেকটি অংশ বিশ্ববাসীর শান্তি ও মঙ্গলময় সুন্দর জীবন গড়তে নদীতে বা পানিতে অবস্থানরত গঙ্গা মায়ের চরণে  ভাসানো হয়।

কল্পনা চাকমা ও রূপস্রী তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, উৎসবের প্রথমদিনে ফুল ভাসানোর মাধ্যমে পুরোনো বছরের যত সব অমঙ্গল এবং দুঃখকষ্ট গ্লানি সব নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ধুয়ে-মুছে ফুল দিয়ে ঘর সাজানোর মধ্যদিয়ে নতুন বছরকে বরণ করা হয়। এটি আমাদের ঐতিহ্যগত উৎসব। যুগযুগ ধরেই পালন করে আসা হচ্ছে। এ ছাড়া পাহাড়ি পল্লীগুলোতে বাড়িতে বাড়িতে চলে ঐতিহ্যবাহী পাচনসহ মজাদার সব খাবার তৈরি করে অতিথিদের আপ্যায়ন। বিহারগুলোতে ধর্মীয় প্রার্থনা, বয়স্কদের প্রণাম করে আশীর্বাদ গ্রহণ। দলবদ্ধ হয়ে বন্ধুবান্ধব আত্মীয় স্বজনরা ঘুরে বেড়ানো আনন্দ করা 

বিজু-বৈসু উৎসব আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক উজ্জ্বল তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, পাহাড়ে চাকমাদের বিজু ও তঞ্চঙ্গ্যাদের বৈসু উৎসব প্রধান সামাজিক উৎসব। এই উৎসবে পুরোনো বছরকে বিদায় ও নতুন বছরকে বরণে তিন দিনব্যাপী নানান অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে এবারও। নদীতে ফুল ভাসানো ছাড়াও চাকমাদের ঐতিহ্যবাহী খেলা নাটিং এবং বাঁশআহরণ প্রতিযোগিতা রয়েছে। সাংস্কৃতিক আয়োজনে মাতানো হয় চাকমা পল্লীগুলো। অন্যদিকে তঞ্চঙ্গ্যাদের ঐতিহ্যবাহী ঘিলা খেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন চলবে।