ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর অভিযোগ, পালাল মালিক-কর্মচারীরা
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বালিগাঁও বাজারের ডক্টরস হসপিটালে ভুল চিকিৎসায় এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যবসায়ী লিটন দোকানদার (৪০) পার্শ্ববর্তী লৌহজং উপজেলার বাঁশিরা গ্রামের লতিফ দোকানদারের ছেলে। তিনি ঢাকার নিউমার্কেট এলাকায় কাপড়ের ব্যবসা করতেন।
ব্যবসায়ী লিটনের স্বজনরা জানায়, তাঁর পেটে ব্যথা হলে আজ বিকেল ৪টার দিকে তাকে ওই ক্লিনিকে নিয়ে আসেন স্বজনরা। এরপর ওই হাসপাতালের এক নার্স তাঁর শরীরে পরপর তিনটি ইঞ্জেকশন পুশ করেন। ইনজেকশন পুশের কিছুক্ষণ পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। পরে ওই হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকসহ মালিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে নিহত লিটনের আত্মীয়স্বজনরা ওই হাসপাতালের সামনে অবস্থান নেন। টঙ্গিবাড়ি থানা পুলিশ হাসপাতালটি ঘিরে রেখেছে।
নিহত লিটনের বেয়াইন কাজল আক্তার বলেন, ‘আমার বেয়াইর সামান্য পেটে ব্যথা হচ্ছিল। পরে আমরা তাকে এ হাসপাতালে নিয়ে আসি। হাসপাতালে আনার পর এখানে তেমন কোনো চিকিৎসক ছিল না। নার্সের পরামর্শে তার শরীরে তিনটি ইনজেকশন পুশ করা হয়। ওই ইনজেকশন পুশ করার পরই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন আমার বেয়াই। এরপরই হাসপাতালের মালিক-কর্মচারীরা পালিয়ে যায়। তারা যদি ভুল চিকিৎসাই না করবে তবে পালিয়ে গেল কেন?’
দুই মাস আগে ওই হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় লৌহজং উপজেলার গাউদিয়া গ্রামের এক প্রবাসীর স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনার পর হাসপাতালের ওটি বন্ধ করে দিয়ে যান মুন্সীগঞ্জের সিভিল সার্জন। কিন্তু তারপর অনুমতি ছাড়াই ওটি ব্যবহার করছিল ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ ব্যাপারে ওই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান বলেন, কোনো ভুল চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। নিহত ব্যবসায়ী স্ট্রোক করেছিল। তার বুকে অনেক ব্যথা হচ্ছিল। ব্যথা কমানোর জন্য ইনজেকশন পুশ করা হয়েছিল। পরে তাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। কিন্তু রোগীর স্বজনরা তাঁকে ঢাকা নিয়ে যায়নি। এর আগে প্রসূতি মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে তিনি বলেন, ওই ঘটনার পর সিভিল সার্জন সাময়িক সময়ের জন্য আমাদের ওটি বন্ধ করেছিলেন। পরে আমরা আবার কাগজপত্র দেখিয়ে অনুমতি নিই।
এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা প্রণয় মান্না দাস বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছি। পরে বিস্তারিত বলতে পারব।’