শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার 

Looks like you've blocked notifications!
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলাম। ছবি : এনটিভি

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।  গতকাল মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) দিনগত মধ্যরাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার শাহাবাগ থানা পুলিশ।

হাইকোর্টের রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি নেওয়ার অভিযোগে কোর্ট কিপার ইউনুস খানের করা মামলায় মুন্সী রুহুল আসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা  মুন্সী রুহুল আসলাম সহকারী  প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পদে কর্মরত অবস্থায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির জন্য কোটা সংরক্ষণের দাবিতে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি এ মামলার কিছু অবজার্ভেশনসহ রুলটি ডিসচার্জ হয়। যা সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটেও রয়েছে। মুন্সী রুহুল আসলাম অজ্ঞাত পরিচয় আসামিদের সহযোগিতায় জাল রায় প্রস্তুত করে বিচারপতিদের স্বাক্ষর জাল করে নিজেই স্বাক্ষর দেন। তিনি রিট শাখাসহ আরডি শাখায় কর্মরত অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের (কর্মচারীদের) সহযোগিতায় মামলার রেকর্ড থেকে মূল রায় সরিয়ে জাল রায় ডুকিয়ে রাখেন। পরে সংশ্লিষ্ট রিট শাখার অনুলিপি বিভাগ থেকে জাল রায়ের নকল সংগ্রহ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে অন্যায় সুবিধা নিয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি লাভ করেন।

এদিকে ফেনীর পিটিআইয়ের ইন্সপেক্টর (বিজ্ঞান) মো. জাকির হোসেন আগেই রেকর্ড থেকে মূল রায়ের একটি সার্টিফাইয়েড কপি সংগ্রহ করে রেখেছিলেন। তিনি ২০২২ সালের ২১ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর মূল রায়ের সার্টিফাইড কপির ফটোকপিসহ এ সংক্রান্ত একটি জালিয়াতির অভিযোগ করেন।

এরপর বিষয়টি প্রধান বিচারপতির নজরে আনা হয়। প্রধান বিচারপতি এ ঘটনায় বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি জাকির হোসেন ও বিচারপতি জিনাত হকের সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন। এ বেঞ্চ ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায় দিয়ে ৮৬/২০১৬ মামলার রুল ডিসচার্জ করেন। একইসঙ্গে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রারকে অনুসন্ধান করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ও চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করার নির্দেশ দেন। এর ফলে শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা  মুন্সী রুহুল আসলাম পেনাল কোডের ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮ ও ৪৭১ ধারায় ফৌজদারি অপরাধ  করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।

গত ১৫ এপ্রিল হাইকোর্টের কোর্ট কিপার ইউনুস খান বাদী হয়ে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন। আদালত ঢাকার শাহাবাগ থানায় মামলা নথিভুক্তির আদেশ দেন। গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে শাহাবাগ থানা পুলিশ শিবচর থানা পুলিশের সহায়তায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা  মুন্সী রুহুল আসলামকে গ্রেপ্তার করে ঢাকায় নিয়ে যায়। 

শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত গোলদার জানান, শাহাবাগ থানা পুলিশ শিবচর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা  মুন্সী রুহুল আসলামকে মঙ্গলবার মধ্যরাতে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁকে ঢাকায় নিয়ে গেছে তারা।