মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হলো বিজিপিসহ ২৮৫ জনকে
মিয়ানমারে বিদ্রোহী সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংঘর্ষে টিকতে না পেরে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্যসহ ২৮৫ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকালে কক্সবাজারের নুনিয়ারছরা জেটি ঘাট দিয়ে তাদেরকে একটি জাহাজে করে ফেরত পাঠানো হয়। তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মিয়ানমারের বিজিপি সদস্যসহ ২৮৫ জনকে আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ব্যাটালিয়ন থেকে বাসে করে প্রথমে কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়ারছরা জেটি ঘাটে আনা হয়। এরপর সেখান থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে তাদের নেওয়া হয় বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মিয়ানমার নৌবাহিনীর জাহাজে। দুপুরে জাহাজটি সেন্টমার্টিন উপকূল হয়ে মিয়ানমারের সিটওয়েতে ফিরে যাবে। জাহাজটি মিয়ানমারে কারাভোগের পর মুক্তি পাওয়া ১৭৩ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে গতকাল বুধবার এসেছিল। ২৮৫ জনের মধ্যে ২৬১ জনই মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সদস্য। বাকিদের মধ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও ইমিগ্রেশন কর্মকর্তা রয়েছেন। গত ৩ মার্চ থেকে কয়েক ধাপে মিয়ানমারের এই নাগরিকরা বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গতকাল দুপুরে মিয়ানমারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল কক্সবাজারে আসে। এরপর তাদেরকে সড়কপথে নাইক্ষ্যংছড়ি সদরে বিজিবির ব্যাটালিয়নে অবস্থিত একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই বিদ্যালয়েই বাংলাদেশে পালিয়ে আসা বিজিপি সদস্যসহ মিয়ানমারের নাগরিকদের রাখা হয়েছিল। মিয়ানমারের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা তাদের পরিচয় শনাক্ত করেন এবং দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করেন। এ সময় বাংলাদেশ নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ে ও মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির কর্মকর্তা কর্নেল মিউ থুরা নউং এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) কক্সবাজার সেক্টরের কমান্ডার, নাইক্ষ্যংছড়ি জোন কমান্ডারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সংঘাতের মধ্যে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা আরও ৩৩০ জনকে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি একটি জাহাজে করে দেশটিতে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা সরকারের বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মিসহ সশস্ত্র সংগঠনগুলোর সংঘাত চলছে।