আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি, আহত ২০
বরিশালে বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলির ঘটনায় চার শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পরে শ্রমিক-আনসার ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে আহত হয় আরও ১৫ জন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেলে বিসিক শিল্প নগরীতে থাকা রপ্তানিমুখী প্রতিষ্ঠান ফরচুন সু’ লিমিটেডে এই ঘটনা ঘটে। কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা শ্রমিকদের ওপর ১০ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করেছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওদিকে শ্রমিকদের ছোড়া ইটের আঘাতে কাউনিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তাফিজুর রহমান এবং পাঁচ আনসার সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। কারখানাটি বিপিএলে ফরচুন বরিশাল টিমের মালিক ও বিসিক শিল্পনগরীর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মিজানুর রহমানের।
আন্দোলনরত শ্রমিক নিপা হালদার বলেন, কোম্পানি কথা দিয়েছিল প্রতি মাসের ৮ তারিখের মধ্যে বেতন দিবে। কিন্তু তা না দিয়ে এক মাসের বেতন পরের মাসের ২৫ তারিখেরও পরে দেয়। আমরা ফরচুন সুজের কাছে দুই মাসের বেতন পাব। আজকে সেই বেতন চাইতে গেলে কোম্পানি দুই মাসের বেতন না দিয়ে ১৫ দিনের বেতন দিতে রাজি হয়। এতে কিছু শ্রমিক কারখানা থেকে বের হয়ে গেলে তাদের আনসার ক্যাম্পে ধরে এনে মারধর করা হয়।’
এই শ্রমিক দাবি করেন, মারধরের একপর্যায়ে গুলিও করেন আনসার সদস্যরা।
আরেক আন্দোলনকারী ইউনুস বলেন, এখন পর্যন্ত চার-পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। শ্রমিকদের যখন মারধর করা হয় তখন ফরচুন সুজের মালিক মিজান ঘটনাস্থলে ছিলেন। তিনিই আনসারদের শিখিয়ে দিয়েছেন যে বেতন চাইলে গুলি করবি।
আরেক আন্দোলনকারী শ্রমিক নাসরিন বলেন, বেতন চেয়েছি। বেতন দিবেন না, ভালো কথা, আমার শ্রমিক ভাইদের মারবেন কেন? এই খবর শুনে আমরা সবাই জড়ো হয়ে মিছিল করছি। অতিউৎসাহি কেউ কেউ কারখানায় ইট মেরে জানালার গ্লাস ভেঙেছে।
আনসার সদস্য ইউসুফ আলী বলেন, শ্রমিকরা কারখানার কাছে বেতন পাবে। তারা আন্দোলনে নেমে প্রথমেই এসে আমাদের আনসার সদস্যদের ক্যাম্পে হামলা চালায়। আমরা উপরের নির্দেশে ১০ রাউন্ড গুলি করি। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়েছে। কেউ নিহত হয়েছে কি না জানা নেই।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আমরা কাজ করছি। এখন পর্যন্ত চার শ্রমিক আহত হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। বিস্তারিত পরে জানাব।