রিমালের তাণ্ডবে পটুয়াখালীতে উপড়ে পড়েছে শত শত গাছ
ঘূর্ণিঝড় রিমাল কলাপাড়া উপজেলায় ভয়াবহ তাণ্ডব চালিয়েছে। রোববার রাতের জোয়ারের সময় ঝড়ের তীব্রতা শুরু হয়। প্রবল বেগে ঝড়োহাওয়ার সঙ্গে প্রবল বর্ষণ। সেই বর্ষণ এখনও অব্যাহত রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে সাত শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। যার মধ্যে ১৪০টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আর আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে ৫২০টি।
অস্বাভাবিক জোয়ারে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের জালালপুর, খ্রিস্টান পল্লী, পশ্চিম হাজীপুর, নবীপুর, ফতেহপুর গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। জালালপুর গ্রাম সংলগ্ন বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। একই দৃশ্য ইউনিয়নের গৈয়াতলা ও নিজকাটা গ্রামেও। চম্পাপুর, ধানখালী ও লালুয়ার অবস্থা আরও খারাপ। এভাবে বিভিন্ন ইউনিয়নের অন্তত ৩০টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
কুয়াকাটায় জলোচ্ছ্বাস ও ঝড়ের ঝাপটায় সৈকতের শত শত গাছ উপড়ে পড়েছে।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, ‘প্রবল বর্ষণ এবং সেই সঙ্গে ঝড়ো হাওয়ায় কুয়াকাটার বহুতল বিশিষ্ট আবাসিক হোটেলগুলোর প্রতিটি তলায় বর্ষার পানি ঢুকে গেছে।
সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে সাগরপাড়ের ধুলাসার ইউনিয়নের কাউয়ার চর ও চর গঙ্গামতি এলাকার বাঁধের বাহিরের বাসিন্দারা। এ দুটি গ্রাম গতকাল দুপুরের পর থেকে তিন দফা জোয়ারে প্লাবিত হয়। এখানকার প্রায় এক হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি পানিতে লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ভেসে গেছে ঘরের থালা-বাসনসহ জিনিসপত্র। দুর্গত মানুষগুলো নিকটবর্তী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। তবে গরু-ছাগল নিয়ে তাঁরা বিপাকে পড়েছে।
গতকাল রোববার বিকেল থেকে কলাপাড়া উপজেলা বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে। পল্লী বিদ্যুতের কলাপাড়া কার্যালয়ের ডিজিএম সজীব পাল বলেন, ‘ঝড়ে বিভিন্ন জায়গায় গাছপালা উপড়ে পড়ে অনেক এলাকায় বিদ্যুতের তার ছিড়ে গেছে, খুঁটি উপড়ে পড়েছে। যার কারণে এগুলো ঠিক না করে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থা সচল করা যাচ্ছে না।’
এদিকে মহিপুর ইউনিয়নের নজিবপুর গ্রামে কৃষক জামাল উদ্দিনের দুটি গরু চাম্বল গাছ উপড়ে চাপা পড়ে মারা গেছে। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় এ ঘটনা ঘটেছে। কৃষক জামাল উদ্দিনের বসতঘরটিও পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়েছে।
কলাপাড়ার ইউএনও মো. রবিউল ইসলাম জানান, রিমালের তাণ্ডবে অন্তত ৭৬০টি পরিবারের ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ১৪০টি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আজ সন্ধ্যায়ও তীব্র ঝড়ো হাওয়া বইছে।