শরীফুল ইসলাম, চাঁদপুর
চাঁদপুরে ফের রাসেল ভাইপার
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় আবারও একটি বিষধর রাসেল ভাইপার (চন্দ্রবোড়া) সাপ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে স্থানীয়রা।
আজ মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে উপজেলার এখলাসপুর ইউনিয়নের নয়ানগর বটতলা এলাকা থেকে সাপটিকে ধরা হয়। এর আগে গত ১৬ মে একই ইউনিয়নের বোরচর এলাকা থেকে একই প্রজাতির আরেকটি সাপ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বেশ কয়েকদিন ধরে উপজেলার মেঘনা নদীর পশ্চিম চরাঞ্চল বোরচরে সাপের উপদ্রব দেখা দিয়েছে। কিন্তু এবার পূর্ব পাড়ে দেখা মিলল রাসেল ভাইপার সাপের।
স্থানীয়রা জানায়, আজ মঙ্গলবার দুপুরে এখলাসপুর নয়ানগর বটতলা এলাকার মেঘনা নদীর পাড়ে রাসেল ভাইপার সাপটিকে দেখতে পায় লোজন। পরে তারা সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী হুমায়ুন মিয়াজি বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের ফলে মেঘনা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় সাপটি বালুর মাঠে চলে এসেছে। সাপটি যখন চলে যাচ্ছিল তখন আমি লোকজন ডাক দিলে তারা এসে সাপটি পিটিয়ে মেরে ফেলে।
এ বিষয়ে এখলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম মুন্না ঢালী বলেন, ‘আমি খবরটি পেয়েছি। নয়ানগর বটতলা এলাকায় একটি রাসেল ভাইপার সাপ ধরার পর মেরে ফেলা হয়েছে। কয়েকদিন ধরে আমাদের ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় সাপ ধরা পড়ছে। আমরা এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতন করছি।’
মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. হাসিবুল ইসলাম বলেন, চন্দ্রবোড়া বা উলু বোড়া (বৈজ্ঞানিক নাম : Daboia russelii) ভাইপারিডি পরিবারভুক্ত একটি অন্যতম বিষধর সাপ। এই সাপ সবচেয়ে বিষাক্ত ও এর অসহিষ্ণু ব্যবহার ও লম্বা বহির্গামী (Solenoglyphous) বিষদাঁতের জন্য অনেক বেশি লোক দংশনের শিকার হয়। বিষক্রিয়ায় রক্ত জমাটবাধা বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অধিক রক্তক্ষরণে দীর্ঘ যন্ত্রণায় মৃত্যু হয়।
আরএমও আরও জানান, সাপ সাধারণত ডিম পাড়ে এবং ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। তবে চন্দ্রবোড়া সাপ ডিম পাড়ার পরিবর্তে সরাসরি বাচ্চা দেয়। এরা বছরের যেকোনো সময় প্রজনন করে। একটি স্ত্রী সাপ গর্ভধারণ শেষে ২০ থেকে ৪০টি বাচ্চা দেয়। তবে কোনো কোনো চন্দ্রবোড়া সাপের ৮০টি পর্যন্ত বাচ্চা দেওয়ার রেকর্ড আছে।
এটি বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে প্রথম দেখা গেলেও মতলব উত্তর পদ্মা ও মেঘনা নদী অববাহিকায় অবস্থিত হওয়ায় এ সাপটি এখন এখানে পাওয়া যাচ্ছে। এজন্য তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ করে চরাঞ্চলের মানুষকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
