দেশ থেকে তামাক নির্মূলে সমন্বিত প্রয়াস চালানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাক নির্মূলের ঘোষণা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী সংগঠন, বেসরকারি সংস্থা ও গণমাধ্যমকে সমন্বিত প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাক নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি তামাকমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হব।’
আজ শুক্রবার (৩১ মে) বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপ্রধান।
রাষ্ট্রপতি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস’ পালনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বাণীতে বলেন, ‘ধূমপান ও তামাক মানুষকে নীরবে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। তামাক চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ধূমপান ও ধোঁয়াবিহীন তামাকজাত পণ্য সেবন জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।’
রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘তামাক ও তামাকজাত পণ্য ব্যবহারে ফুসফুস ও মুখগহ্বরসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ক্যানসার, এজমা, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, ডায়াবেটিসসহ নানাবিধ জটিল ও প্রাণঘাতী অসংক্রামক রোগ দেখা দেয়। ধূমপান মাদক সেবনের প্রবেশ পথ হিসেবেও কাজ করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তামাক সেবনের ফলে পৃথিবীতে বছরে ৮৭ লক্ষাধিক মানুষ অকালে মারা যায়, যা প্রতিরোধযোগ্য।’
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপান এবং তামাক সেবনে সর্বোচ্চ ক্ষতির ঝুঁকিতে থাকে শিশু-কিশোররা। শিশু-কিশোরদের ই-সিগারেট, হিটেড টোব্যাকোসহ সব ধরনের তামাকজাত পণ্য থেকে দূরে রাখতে প্রচলিত গণমাধ্যমসহ অনলাইন স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় তামাক ও তামাকজাত দ্রব্যের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাতে হবে।’ এ পরিপ্রেক্ষিতে এ বছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ প্রতিহত করি, শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করি’ যথার্থ হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, “সরকার শিশু-কিশোরদের তামাকের নেশা থেকে বিরত রাখতে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৫’ এর সংশোধন এবং ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০১৫’ প্রণয়নসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের নিকট তামাক বিক্রয় এবং তামাকজাত দ্রব্যের সব ধরনের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নাটকে ধূমপানের দৃশ্য প্রদর্শন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি সিনেমায় দৃশ্যায়নও কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। একটি সুস্থ সুন্দর তামাকমুক্ত সমাজ ও প্রজন্ম গঠনে বিদ্যমান আইনের কঠোর বাস্তবায়নে সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে।”
রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে তামাক নির্মূলের ঘোষণা দিয়েছেন। এ লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী সংগঠন, বেসরকারি সংস্থা ও গণমাধ্যমকে সমন্বিত প্রয়াস চালাতে হবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা একটি তামাকমুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হব, এ প্রত্যাশা করি।’
‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৪’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন রাষ্ট্রপতি।