দানব সরকার সবকিছু গিলে খেতে চায় : মির্জা ফখরুল
দেশ ও স্বাধীনতা রক্ষায় জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভয়াবহ দানব ও লুটেরা আওয়ামী লীগের হাতে দেশ, গণতন্ত্র, অর্থনীতি ও মৌলিক অধিকার ধ্বংস হয়ে গেছে। সবকিছুই এরা গিলে খেয়ে ফেলতে চায়।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আজ শনিবার (২৯ জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনে আয়োজিত সমাবেশে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও বক্তব্য দেন। নয়াপল্টনের এ সমাবেশে সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করেই নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে যোগ দেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের এ সমাবেশ উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইল থেকে নয়াপল্টন হয়ে ফকিরাপুল পর্যন্ত লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে দেশের গণতন্ত্রের ওপর আঘাত এসেছে। আগেও এরা বহুদলীয় গণতন্ত্র হত্যা একদলীয় স্বৈরাচারী শাসন কায়েম করেছিল। স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। এখন আবার একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমীগর বলেন, ‘ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এরা দখলদার। এদের হাতে দেশের অর্থনীতিকেও ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের সহযোগী সাবেক সেনা প্রধান ও পুলিশ প্রধান শতশত কোটি টাকা লোপাট করেছে।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে দেশের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আজ আমাদের নেত্রী মুক্ত থাকলে দেশকে আওয়ামী লীগ এ অবস্থায় নিতে পারতো না। এ কারণেই মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে আমাদের নেত্রীকে দণ্ড দিয়ে কারাগারে বন্দি করেছে। দেশকে মুক্ত করতে হলে আমাদের মুক্ত করতে হবে।
ভারতকে সবকিছু উজাড় করে দেওয়ার সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভয়াবহ দানব সরকার এখন ভারতকে খুশি করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। এ কারণেই শেখ হাসিনা ভারতকে উজাড় করে দেওয়ার কথা নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) গর্ব করে বলেছেন –‘ভারতকে যা দিয়েছি আজীবন মনে রাখবে।’ এটা কোনো রাজনৈতিক দলের প্রধানের কথা হতে পারে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, ভয়াবহ এ দানব সরকারের কালো থাবা থেকে দেশকে উদ্ধার করতে হলে তীব্র সংগ্রাম করতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে এ অবৈধ সরকারের পতন ঘটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া আর গণতন্ত্র এই দুটো জিনিস আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। ৬০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়ছে। গণতন্ত্রকামী মানুষকে মামলা দিয়ে, গুম করে দেশের গণতন্ত্রকে চিরদিনের জন্য নির্বাসনে পাঠিয়ে দেওয়া। তিন তিনটা নির্বাচন গায়ের জোরে করে নেওয়া হয়েছে। চলমান আন্দোলনে তীব্র থেকে তীব্রতর করে তুলতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, অর্থনীতি ধ্বংস করে দিচ্ছে। ব্যাংক লুট করে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা চিন্তা করতে পারি না সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান আজিজ দুর্নীতির সাথে জড়িত।
সরকারের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। অন্যথায় সরকারকে যে কোনো পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হবে। এই দেশের মানুষ দেশনেত্রীকে কারাগারে থেকে চলে দেবে না। আমাদের সামনে কোনো বিকল্প নেই। দেশনেত্রীকে রক্ষা করতে হলে আন্দোলনকে তীব্র থেকে তীব্র করতে হবে।
উপস্থিত রয়েছেন—বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, নিতাই রায় চৌধুরী, আহমেদ আযম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, জয়নুল আবেদিন ফারুক, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, অধ্যক্ষ সেলিম ভুইঁয়া, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহস্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. মাইনুল ইসলাম, মজিবুর রহমান, আকরামুল হাসান মিন্টু, নিপুণ রায় চৌধুরী, ফজলুর রহমান খোকন, কাজী রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সাবেক সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুবদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোনায়েম মুন্না, সহসভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের বর্তমান কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ ও যুবদলনেতা গিয়াস উদ্দিন মামুনসহ অন্যান্যরা।