সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দাবিতে আজও উত্তাল রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। দাবি আদায়ে অনড় শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবস্থান নেওয়ায় দুই ঘন্টা বন্ধ থাকে সব ধরনের যান চলাচল।

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, শিক্ষার্থীরা দুপুরে অবস্থান নেন বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে। এ সময় তারা সাভার ডেইরি ফার্ম বাস স্ট্যান্ডের ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে কোটা বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ করেন।

অবরোধে কারণে মহাসড়কের দুই পাশে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। এতে অসুস্থ হয়ে পড়েন বয়স্ক যাত্রীরা। নারী ও শিশুদের পোহাতে হয় দুর্ভোগ। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও তারাও ছিলেন নির্বিকার।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে এসে শেষ হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তৌহিদ সিয়াম বলেন, বাংলাদেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করেই এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।

২০১৮ সালে জারি করা সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখাসহ চার দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও জানান তৌহিদ সিয়াম।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের দাবি, নিজেদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতেই তারা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন। অনতিবিলম্বে সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি যৌক্তিক সংস্কার করতে হবে। অন্যথায়, কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

এর আগে শিক্ষার্থীরা একই দাবিতে গত চার দিন যথাক্রমে ১০ মিনিট, ২০ মিনিট, এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট ও ৩৫ মিনিট মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হচ্ছে–২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে (সকল গ্রেডে) অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দিতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী কেবল অনগ্রসর ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করতে হবে। সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না। কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দিতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

একইসঙ্গে বৈষম্যমূলক পে-স্কেল ও পেনশন স্কেলের প্রতিবাদে শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বাত্মক কর্মবিরতির কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বন্ধ রয়েছে সব ক্লাস ও পরীক্ষা। একই শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মাত্রা দিন দিন তীব্র হওয়ায় অচল হয়ে পড়েছে প্রশাসনিক ও শিক্ষা কার্যক্রম।