কোট আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিতে সরকার অপকৌশল করছে : মির্জা আব্বাস
‘শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিতে সরকার অপকৌশল করছে’ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির নবগঠিত কমিটির নেতাদের নিয়ে আজ শনিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলন যারা করছে, তাদের দাবি-দাওয়া ন্যায্য। বিএনপি এর সঙ্গে আছে বলে সরকার যে কথা এখন বলেছে, এসব কথা বলে আসলে বিষয়টাকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। এটা তাদের (সরকার) একটা অপপ্রয়াস, অপকৌশল এই আন্দোলনকে (কোটা আন্দোলন) অন্য দিকে ধাবিত করার জন্য। আমরা ভয় পাচ্ছি এইটুকুই, এই আন্দোলনের ফাঁক দিয়ে আবার অন্য কোনো অপকর্ম তারা (সরকার) করছে কি না, এদেশের বিরুদ্ধে কোনো ষড়যন্ত্র করছে কি না, এটা আমরা ভয় পাচ্ছি।’
মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘বিএনপির এখন চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, এই সরকারের পতন ঘটানো। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব কিছুই থাকবে না। এই হায়নারের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে।’
আজ দুপুর ১২টায় মির্জা আব্বাস ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক সাইফুল আলম নিরব ও সদস্য সচিব আমিনুল হক এবং দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু ও সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনসন সহাস্রাধিক নেতাকর্মীকে নিয়ে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে যান এবং পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
এই সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মীর সরাফত আলী সপু, তাবিথ আউয়াল, যুব দলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানিসহ মহানগর নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণের পর মির্জা আব্বাস সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আজকে আমরা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের নবগঠিত কমিটির সবাইকে নিয়ে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজার পুস্পস্তবক অপর্ণ করতে এসেছি। আমাদের নবগঠিত কমিটির সূর্য সন্তানেরা শপথ গ্রহণ করল। এদেশের মাটি ও মানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তারা মুক্ত করবে। দেশনেত্রী যখন অসুস্থ থাকে, সারা দেশ তখন অসুস্থ থাকে। এই জাতি ও দেশকে অসুস্থতা থেকে মুক্ত করতে হবে, এই প্রত্যায়ে আজকে আমাদের এই মাজার জিয়ারত।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘অতীতে বিএনপির কোনো আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি। ওইসব আন্দোলনে আমাদের ছেলেরা, আমাদের কর্মীরা, আমাদের নেতারা দলে দলে জেলে গিয়েছে। এখনও যাচ্ছে, আবার বেরুচ্ছে, আবার ঢুকছে। তারা গুলি খেয়েছে, আহত হয়েছে, শাহাদাৎ বরণ করেছে বহু লোক। বিএনপির কোনো আন্দোলন ব্যর্থ হয়নি, বরং সরকারই নানা কলা-কৌশল, ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করে আন্দোলনকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছে, এখনও করছে।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘মহানগর কমিটির আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। এরপর সাংগঠনিক নিয়মনীতি অনুসরণ করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হবে।’
কমিটি গঠনে ‘বাণিজ্য’ হয় এই অভিযোগ নাকচ করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ অলীক কথা-বার্তা। আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। আহ্বায়ক কমিটি ছাড়া কাউন্সিল হয় না। আহ্বায়ক কমিটি করার পর পরবর্তিতে কাউন্সিল করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়।’
গত ৭ জুলাই বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ, চট্টগ্রাম ও বরিশাল মহানগরের নতুন আংশিক আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে।