নরসিংদী কারাগার থেকে পলাতক ২৮৬ বন্দির আত্মসমর্পণ, গ্রেপ্তার ২ জঙ্গি
নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ২৮৬ জন বন্দি গত তিন দিনে আত্মসমর্পণ করেছেন। অপরদিকে কারাগারে হামলায় জড়িত সন্দেহে আজ বুধবার (২৪ জুলাই) দুপুর পর্যন্ত ২১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এছাড়া কারাগার থেকে পলাতক দুই নারী ‘জঙ্গি’ কে গ্রেপ্তার করেছে অ্যান্টি টেররিজম ইউনিট। একইসঙ্গে ৩৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ১১০০ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্যে গত শুক্রবার বিকেলে নরসিংদী কারাগারে হামলার পর ৮২৬ বন্দি পালিয়ে যান। এ ঘটনায় নরসিংদী কারাগারের জেলসুপার আবুল কালাম আজাদ ও জেলার কামরুল ইসলামকে মঙ্গলবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলম আজ বুধবার (২৪ বুধবার) এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া কারাগার পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘কেন এ ঘটনা ঘটল, কারও গাফিলতি আছে কি না, কেউ এখানে সহযোগিতা করেছে কি না—এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইতোমধ্যে দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তিন সদস্যের কমিটি করেছেন আইজি প্রিজন এবং ছয় সদস্যের কমিটি করেছে সুরক্ষা সেবা বিভাগ।’
আজ বুধবার বেলা সোয়া একটার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা কারাগার পরিদর্শন করেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান।
আত্মসমর্পণকারী বন্দি কামরুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, বাইরে থেকে লোক এসে তালা ভেঙে আমাদের বের হয়ে যেতে বলে। তাদের কথায় আমরা বের হয়ে যাই। অনেকে বের হতে না চাইলে মারপিট ও গালাগালি করে। পরে সবাই বের হয়ে যায়।
সাতবছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আত্মসমর্পণকারী আরেক বন্দি স্বপন মিয়া বলেন, আমি কারাগারে রান্নার কাজ করি। সকল কয়েদিকে খাবার দিয়ে আমরা লকআপ হওয়া প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এরইমধ্যে কারাগারের ভেতরে কাঁদানে গ্যাস ছোড়া হয়। পরে বাইরের লোকজন মেইন গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতির কারণে আমরা বাইরে বের হয়ে যেতে বাধ্য হই।
কেন আত্মসমর্পণ করলেন জানতে চাইলে স্বপন মিয়া বলেন, আমার চার বছরের কারাদণ্ড শেষ। তাই আমি আত্মসমর্পণ করেছি।
কারারক্ষী নাদিমুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, একসঙ্গে ১০-১২ হাজার লোক আক্রমণ করায় তাদের হামলার মুখে আমরা টিকতে পারিনি। তারা ভেতরে ঢুকেই আগুন ধরিয়ে দেয়। চারদিক থেকে মৌমাছির মতো আক্রমণ করায় আমরা তাদের প্রতিহত করতে পারিনি। প্রাণ বাঁচাতে আমরা আসামিদের সাথে মিশে যাই।