লক্ষ্মীপুরে যুবলীগনেতাসহ নিহত ৩, ভাঙচুর-লুটপাট
লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে ভাঙচুর ও লুটপাট চলছে। গত দুদিনে থানা, উপজেলা পরিষদের অন্তত ১২টি কার্যালয় ও আওয়ামী লীগের আট নেতার কার্যালয়-বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, অস্ত্র লুটসহ আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আজ মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সকালে উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি মেহেদী মঞ্জুর বাড়িতে ভাঙচুর করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রামগঞ্জে গতকাল সোমবার (৫ আগস্ট) আলাদা ঘটনায় দুজনকে পিটিয়ে হত্যা এবং আগুন দেওয়ার কারণে ভয়ে এমপি আনোয়ার হোসেন খানের বাণিজ্যিক ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পড়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ সন্ধ্যায় উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাংগঠনিক সম্পাক ইমতিয়াজ আরাফাত তিনজনের মৃত্যু ও হামলা-ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার খবরে গতকাল বিকেলে আন্দোলনকারীরা উপজেলার ভোলাকোটের আথাকরা গ্রামের যুবলীগনেতা মো. নাসিরকে আটক করে। এ সময় তাকে প্রকাশ্যে পিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়। সারারাত মরদেহ রাস্তায় পড়ে থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। আজ সকালে জানাজা ছাড়াই তাঁর বোনেরা মরদেহ দাফন করে।
নিহত নাসির জেলা যুবলীগের বিলুপ্ত কমিটির সদস্য ও ভোলাকোট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বশির আহমেদ মানিকের ছোট ভাই।
একই সময় লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের মালিকানাধীন খান টাওয়ারে ভাঙচুর করে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা। জীবন বাঁচাতে ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে ১২ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তবে পৌরসভার কাউন্সিলর কামরুল হাসান ফয়সাল মাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ ছাড়া জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সোমবার রাতে রামগঞ্জ পৌর শহরের সোনাপুর এলাকায় মনির হোসেন আটিয়া (৬০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ। মনিরের পরিবারের ভাষ্যমতে, একই বাড়ির জসিম, নাছির ও কামাল হামলা চালিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পৌরসভার মেয়র ও পৌর কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের পাটওয়ারীর আঙ্গারপাড়ার বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আসবাবপত্রসহ সব মালামাল লুট করে নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্নস্থানে আরেও সাত নেতার কার্যালয়, বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়।
উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইউএনও, চেয়ারম্যান, প্রকৌশলী, পিআইওসহ অন্তত ১২ কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় তিনটি সরকারি গাড়ি, নথিসহ আসবাবপত্র বাইরে এনে তছনছ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
সার্বিক বিষয়ে বক্তব্য জানতে রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমানের মোবাইল ফোনে কল করেও পাওয়া যায়নি। তবে রামগঞ্জ থানায় অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র লুটের পর থেকে জেলা ও থানা পুলিশের কারও বক্তব্য জানা যায়নি।