লক্ষ্মীপুরের দুর্গম চরে ৫ মণ ওজনের কুমির, আতঙ্কে এলাকাবাসী
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে দুর্গম চর ঘাসিয়া থেকে প্রায় ৫ মণ ওজনের একটি বড় কুমির ধরা পড়েছে। স্থানীয়রা কুমিরটি ধরে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে বন বিভাগসহ প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে।
এছাড়া প্রায় ২০ দিন আগে আরও একটি কুমির দেখা মেলে ওই চরে। তবে আকারে ওই কুমিরটি ছোট ছিল। বার বার কুমির দেখা মেলায় স্থানীয় জনপদে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। উদ্ধার হওয়া কুমিরটি বাবুল নামে এক ভাসমান জেলের পায়ে কামড় দিয়ে মাংস নিয়ে গেছে। পরে তিনি স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মোবারক, মান্নান ও শরীফসহ কয়েকজন জানায়, বুধবার (২ অক্টোবর) দিনগত রাতে রায়পুরের দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়নের চর ঘাসিয়ার মাঝি বাড়ির একটি হাঁসমুরগির খোঁয়াড়ে হানা দেয় কুমিরটি। এতে বাড়ির লোকজন কুমিরটি দেখতে পায়। পরে স্থানীয় লোকজন কুমিরটি ধরে চান্দারখাল মাছঘাটে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন কুমিরটি স্থানীয়দের কাছ থেকে উদ্ধারের পর বন বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে।
চর ঘাসিয়ার বাসিন্দা শাহ আলম মাঝি বলেন, কুমিরটি আমার বাড়ি থেকে আটক করা হয়েছে। বুধবার ভোরে আমাদের বসত বাড়িতে কুমিরটি আসে। পরে সেটি বাড়ির পাশের পুকুরে নেমে যায়। সারাদিন ওই পুকুরেই ছিল। আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। বিষয়টি স্থানীয় লোকজনকে অবগত করি। তারা কুমিরটি ধরার উদ্যোগ নেয়। পরে রাতে কুমিরটি আমাদের হাঁসমুরগি খেতে খোঁয়াড়ে হানা দেয়। তখন স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় সেখান থেকে কুমিরটি ধরতে সক্ষম হই।
মোবারক মিয়া বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মেঘনা নদীর দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। ধারণা করা হচ্ছে, সুন্দরবন এলাকা থেকে স্রোতের সঙ্গে কুমিরটি আমাদের অঞ্চলে চলে আসে। পরে মেঘনা নদী থেকে চরের ফসলি ক্ষেত অতিক্রম করে কুমিরটি ঘটনাস্থল এসে অবস্থান নেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা খলিল মাঝি ও শরীফ হোসেন জানান, চরের দিকে আরও কুমির থাকতে পরে। গত এক মাস আগে লোকজন নদীতে এবং খালে কুমির দেখতে পায়। গত দুই সপ্তাহ আগে আলতাফ মাস্টারের পুরোনো মাছঘাটে বাবলু নামে এক ব্যক্তিকে একটি কুমির কামড় দেয়। তার ডান পায়ের উপরের অংশের মাংস ছিঁড়ে নেয়। তাকে বরিশালের একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
রায়পুর উপজেলা বনবিভাগের রেঞ্জ সহকারী মতিউর রহমান সোহাগ বলেন, কুমিরটি আমাদের হেফাজতে নিয়েছি। সেটিকে জেলা অফিসে পাঠানো হবে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বন্যার কারণে পানি বেড়ে যাওয়ায় খাবারের খোঁজে কুমির এ অঞ্চলে চলে আসতে পারে। তবে কোন এলাকা থেকে এসেছে, তা এখনই সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না।