স্বার্থান্বেষীদের ভূমিকা নিয়ে সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান রিজভীর
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ১৬ বছর ধরে নিপীড়িত দেশবাসী যখন সোনালি ভবিষ্যতের চিন্তায় উদ্বুদ্ধ, তখন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিদের সুবিধাবাদী ভূমিকা সম্পর্কে সবার ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন। এদের সম্পর্কে সচেতন থাকার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আজ শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দীর্ঘ দুঃসময়ে প্রবাসে অবস্থান করে নিজেদের খেয়ালখুশি মতো জীবনযাপন করে এখন দেশে ফিরে এসে প্রভাব খাটিয়ে আরও বেশি স্বার্থ উদ্ধারের চেষ্টায় তৎপর থেকে প্রশাসন, ব্যবসায়ী মহল ও মিডিয়া হাউসসহ নানা প্রতিষ্ঠানে খবরদারির চেষ্টা করা হচ্ছে। এহেন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত খবরদারি সম্পর্কে সচেতন থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানসহ সবাইকে সচেতন থাকার অনুরোধ করছি। এ সমস্ত ব্যক্তিরা কেউ বিএনপির প্রতিনিধিত্ব করে না।’
বিএনপিনেতা রিজভী বলেন, ‘১৬-১৭ বছর দুর্বিষহ মহাযন্ত্রণার ফ্যাসিবাদী অপশাসন সহ্য করতে গিয়ে অসংখ্য প্রাণ ঝরে যায়, অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করে, চিরদিনের জন্য অন্ধ হয়ে যায় অনেক নেতাকর্মী। চিরতরে হারিয়ে যায় গণতন্ত্রের পক্ষে জোরালো কণ্ঠস্বরের বিপ্লবী নেতাকর্মীরা। অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিকভাবে পর্যুদস্ত হয়ে নিজ দেশেই বাস্তুহারা শরণার্থীতে পরিণত হয়েছে তারা। ৫ আগস্টের বিপ্লবের গুরুত্ববহ ঘটনার পর ১৬ বছর ধরে নিপীড়িত দেশবাসী যখন সোনালি ভবিষ্যতের চিন্তায় উদ্বুদ্ধ, তখন দলের কয়েকজন স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির সুবিধাবাদী ভূমিকা সম্পর্কে সবাইকে ওয়াকিবহাল থাকা প্রয়োজন।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং ছয় মিলিয়ন নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা ও ফরমায়েশী সাজা দিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তির যবনিকাপাত ঘটানোর আয়োজন করা হয়েছিল। নিপীড়নের চরম অভিঘাত, অপ্রীতিকর ও মর্মপীড়াদায়ক ঘটনার ধারায় নিপীড়নের চাপে জর্জরিত নেতাকর্মীরা যখন অসহায় ও ধ্বংসের মুখোমুখি, ঠিক সেই সময়ে নিজেদের আত্মসুখ বৃদ্ধির জন্য দেশ ও দল ছেড়ে অনেকেই বিদেশে পাড়ি জমায়। এই দুঃসময়ে অনেকেরই কোনো খবর ছিল না। সম্প্রতি ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অনুকূল পরিবেশে নিজ স্বার্থ সংরক্ষণ ও স্বার্থ বৃদ্ধির মানসে নিজ অনুকূলে প্রশাসনকে প্রভাবিত করাসহ নানা প্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছে বলে দল বিভিন্ন সূত্র থেকে জানতে পেরেছে।’
রিজভী আরও বলেন, ‘এক্ষেত্রে জনপ্রশাসন, পুলিশ ও মিডিয়া হাউসকে টার্গেট করে দলের নাম ভাঙিয়ে কেউ কেউ ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। অথচ দলের দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের ওপর যখন উত্তরোত্তর ক্রমবর্ধমানভাবে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পৈশাচিক নির্যাতন বৃদ্ধি পাচ্ছিল, তখন নিজেদেরকে নিরাপদ রাখতে এরা বিদেশে শান্তি ও স্বস্তিতে দিনযাপন করেছে। রাজনৈতিক দুর্যোগের ঘনঘটায় এদের জীবন কেটেছে নিরাপদে। অথচ আওয়ামী ভয়াবহ ফ্যাসিবাদের পতনের পরেও তাদের সৃষ্ট ক্ষতচিহ্নগুলো এখনও নিরাময় হয়নি। ৫ আগস্ট পর্যন্ত হাসিনার পেটোয়া বাহিনীগুলোর ছোড়া বুলেট ও ধারালো অস্ত্রে দীর্ঘ দুই মাসের বেশি জীবন-মৃত্যুর লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে এখনও প্রতিদিনই কেউ না কেউ মৃত্যুবরণ করছে।’