নবনিযুক্ত রমেক অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে কক্ষে তালা
নবনিযুক্ত রংপুর মেডিকেল কলেজের (রমেক) অধ্যক্ষ ডা. মাহফুজুর রহমানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। আজ বুধবার (৩১ অক্টোবর) অধ্যক্ষের কক্ষে তালা দিয়ে তাঁকে পদত্যাগের সময় বেধে দেয় তারা।
আগামী শনিবারের (২ নভেম্বর) মধ্যে পদত্যাগ না করলে অধ্যক্ষকে কলেজে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেয় তারা। অধ্যক্ষ স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (স্বাচিপ) নেতা এবং শহীদ আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন বিকৃতকারী বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
ডা. মাহফুজুর রহমানকে রংপুর মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়ায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রমেক এবং ব্যহত হচ্ছে শিক্ষা ও চিকিৎসা কার্যক্রম।
এদিকে আন্দোলনের খবর পেয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজে নির্ধারিত প্রোগ্রামে না এসে বগুড়ায় চলে গেছেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাজমুল হোসেন।
গত সোমবার (২৯ অক্টোবর) রংপুর মেডিকেল কলেজের উপাধাক্ষ ডা. মাহফুজুর রহমানকে একই কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-চিকিৎসক, ড্যাব ও নিপীড়নবিরোধী চিকিৎসকরাসহ ছাত্র সমাজ।
আজ বৃহস্পতিবার ৩১ অক্টোবর সকালে তারা অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে সেখানে একটি ব্যানার লাগিয়ে দেয়। এরপর ক্যাম্পাসে দুই ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। গতকাল মঙ্গলবারও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছিল।
আজ কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, জুলাই বিপ্লবে নিহত শহীদ আবু সাঈদের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পাল্টে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছিলেন আওয়ামীপন্থী ডা. মাহফুজুর রহমান। এ ছাড়া তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাম্পাসে পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ১৫ বছর ধরে রংপুরে বসবাস করে আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত হয়ে অনেক অবৈধ সুবিধা ভোগ করে আসছেন তিনি। আগামী শনিবারের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করে অন্যত্র চলে না গেলে তাঁকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ড্যাব নেতা সহযোগী অধ্যাপক ডা. শরীফুল ইসলাম মণ্ডল, ডা. মোখলেসুর রহমান সরকার, ডা. মাহমুদুল হক সরকার, ডা. শামসুজ্জামান সরকার, ডা. আনোয়ার হোসেন, বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল ছাত্র সামিউল হাসান খান রনি, নিপীড়নবিরোধী চিকিৎসক সমাজের ডা. আফিয়া হোমায়রা।
নতুন অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে চিকিৎসকরা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যবস্থা ব্যহত হচ্ছে। ভোগান্তিতে পড়েছে রোগীরা। একই সঙ্গে কলেজের ক্লাস ও পরীক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে।