স্থানীয়দের প্রত্যাশা অনুযায়ী সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে : রিজওয়ানা হাসান
‘স্থানীয়দের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভবদহ সমস্যার স্থায়ী সমাধানের দিকেই হাঁটবে সরকার।
আজ রোববার (১০ নভেম্বর) যশোরের জলাবদ্ধ ভবদহ এলাকা পরিদর্শনকালে এ কথা বলেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালায় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ান হাসান।
সৈয়দা রিজওয়ান হাসান বলেন, ‘এলাকার মানুষের মূল দাবি আমডাঙ্গা খাল প্রশস্ত করা এবং নাব্য হারানো নদীগুলো খনন করা। সেটাই করা হবে।’ তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বা অন্য কোন সংস্থা এবার নিজেরা কোনো মতামত আরোপ করবে না বলে তিনি জানান।
এলাকার মানুষের আরও কিছু দাবি প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘ভুক্তভোগী মানুষের জন্য ত্রাণ প্রয়োজন। এ ছাড়া বিভিন্ন সংস্থা তাদের কাছ থেকে যে ঋণ আদায় করছে সেটা শিথিল বা স্থগিত করার দাবিও রয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি ঢাকায় ফিরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন বলে স্থানীয়দের আশ্বস্ত করেন।
আজ রোববার দিনভর অভয়নগর উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের জলাবদ্ধ বাড়িঘর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন সৈয়দা রিজওয়ান হাসান।
এর আগে সৈয়দা রিজওয়ান হাসান বিমানযোগে যশোর পৌঁছে বেলা ১১টায় অভয়নগর উপজেলার যশোর-খুলনা মহাসড়কের আমডাঙ্গা খাল পরিদর্শন করেন। পরে খালের পাশে স্থানীয়দের সঙ্গে বেশকিছুক্ষণ মতবিনিময় করেন তিনি। দুপুরে সেখান থেকে সুন্দলী ইউনিয়নের জলাবদ্ধ বিভিন্ন গ্রাম পরিদর্শন ও জলাবদ্ধ নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন। পরে ভবদহ এলাকার সবচে বড় ২১ ভেন্টের স্লুইস গেট পরিদর্শন ও হরি নদীর খননকাজ ঘুরে দেখেন।
এ সময় সৈয়দা রিজওয়ান হাসানের সঙ্গে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতরাসহ জলাবদ্ধ এলাকার বিপুল ভুক্তভোগী উপস্থিত ছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ভবদহ নিয়ে এর আগে কত প্রকল্প হয়েছে সেটা জানতে হবে।’ তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে প্রশ্ন করেন, ‘এত প্রকল্প এতবার হলে বারবার কেন এই সমস্যা ফিরে আসে?’ এ ব্যাপারে তিনি আরও বলেন, ‘পুরো জিনিসটা বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। যারা দায়ী তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
উপদেষ্টা বলেন, ‘২০০৩ থেকে ২০২৪, সমস্যাটা দীর্ঘ এই সময়ে কারিগরি দিক থেকে অনেক জটিল হয়ে গেছে। সেটাও মাথায় রাখতে হবে। আগের প্রকল্পগুলো মূল্যায়ন এবং সেগুলোর ব্যর্থতার জন্য কারা দায়ী তা চিহ্নিত করার পাশাপাশি নতুন কার্যক্রমও যাতে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতার সঙ্গে হয় সেজন্য স্থানীয় ভুক্তভোগী ও ছাত্র প্রতিনিধিদের একটা কমিটির ভেতরে নিয়ে আসা হবে’।
ভবদহ এলাকার খালগুলো অবৈধ দখলদারদের কবলে চলে যাওয়া প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা জেলা প্রশাসকের দায়িত্ব, তিনি খালগুলো অবৈধ দখলদার মুক্ত করবেন। এই এলাকায় কেউ মাছ চাষ করলে তার জন্য আলাদা স্পষ্ট নীতিমালা আছে। সেটা মেনেই তাকে মাছ চাষ করতে হবে। মাছ চাষের কারণে যদি পানি প্রবাহে বাধার সৃষ্টি হয়, জলাবদ্ধতা তীব্র আকার ধারণ করে, সেটা মেনে নেওয়া হবে না।’
সৈয়দা রিজওয়ান হাসান আরও বলেন, ‘৫-১০ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা জিম্মি রেখে ১৬ হাজার মাছের ঘেরকে রক্ষা করতে পারি না। অবৈধ ঘের সরাতেই হবে।’