ফিলিস্তিনি জনগণের পক্ষে অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ফিলিস্তিনের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ ও রাষ্ট্রের অধিকারের জন্য তাদের ন্যায্য সংগ্রামে দৃঢ়তার সঙ্গে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার ব্যক্ত করে ফিলিস্তিন সমস্যার ন্যায্য সমাধানে বাংলাদেশের অটল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংহতি দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের জাতি সর্বদা একটি ন্যায্য সমাধানের সমর্থনে অটল থেকেছে যা ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারকে সমুন্নত রাখে, যার মূলে রয়েছে ১৯৬৭ সালের পূর্ববর্তী সীমানার ভিত্তিতে পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা।’
বাণীতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের আহ্বান সম্প্রতি একটি গণবিপ্লবের অভিজ্ঞতা অর্জনকারী বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে গভীরভাবে অনুরণিত হয়, যারা বিপ্লবের সবচেয়ে মর্মস্পর্শী চিত্রাবলির মধ্যে সংহতিতে ঐক্যবদ্ধ, বাংলাদেশ ও ফিলিস্তিনের পতাকা পাশাপাশি রেখে একটি বিজয়ী জনসমুদ্রকে ধারণ করে।
গাজায় ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর চলমান সহিংসতা, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর নজিরবিহীন দুর্ভোগ সৃষ্টি করেছে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, জাতিসংঘের শিশু ও সশস্ত্র সংঘাতের প্রতিবেদনগুলো অনুযায়ী, শুধু গত বছরেই গাজায় ২০০৫ থেকে ২০২২ সালের পুরো সময়ের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে।
এই চলমান ট্র্যাজেডি সামগ্রিকভাবে মানবতার জন্য একটি গভীর অবমাননা উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ফিলিস্তিনিরা ব্যয়যোগ্য জনগণ নয় এবং যারা এই নৃশংসতার জন্য দায়ী তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। তিনি নিরপরাধ মানুষ, বিশেষ করে এই সংঘাতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ নারী ও শিশুদের সুরক্ষায় অবিলম্বে ও সর্বাত্মক যুদ্ধবিরতির জন্য বাংলাদেশের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
ড. ইউনূস বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তির একমাত্র কার্যকর পথ হিসেবে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে উপলব্ধি করতে জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই সিদ্ধান্তমূলকভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, ফিলিস্তিনি ভূমির অবৈধ দখলের অবসান ঘটাতে হবে, ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের স্বাধীন রাষ্ট্রের অধিকার প্রদান করতে হবে। এই অবস্থানটি সম্প্রতি ১৯ জুলাই ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে ইসরায়েলের দখলকে বেআইনি ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক আদালতের উপদেশমূলক মতের ফলে জোরালো হয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ আমরা ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা, শান্তির প্রতি তার অটল অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি এবং ফিলিস্তিনিদের তাদের সব অবিচ্ছেদ্য অধিকার এবং নিরাপদ, স্থিতিশীল ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষার পূর্ণ বাস্তবায়নের পক্ষে সমর্থন ব্যক্ত করছি।’