বাংলাদেশকে দুর্বল নতজানু-শক্তিহীন ভাবার অবকাশ নেই : আইন উপদেষ্টা
আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সবার উপরে দেশ, এটা থেকে আমরা কখনও বিচ্যুত হব না। বাংলাদেশকে দুর্বল নতজানু ও শক্তিহীন ভাবার কোনো অবকাশ নেই।
আজ বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ড, আসিফ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিরোধী বিভিন্ন তৎপরতা চলছে। হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ, বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা এসবের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। ভারতের এই সমস্ত পদক্ষেপ এর বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার যে আত্মমর্যাদাশীল সাহসী ভূমিকা তার প্রশংসা করা হয়েছে এবং সরকারের সঙ্গে সলিডারিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, একইসঙ্গে ভারতের এই সব প্রচারণার বিরুদ্ধে আরও শক্তিশালী ভাবে এবং আরও বেগবান ভাবে মোকাবিলার কথা বলা হয়েছে। এজন্য আমাদের যারা প্রবাসী, বন্ধু রাষ্ট্রের সহযোগিতা এবং বিদেশি সাংবাদিকদের নিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আমাদের যোগাযোগ দক্ষতা এবং আইনি দক্ষতা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে গত ১৫ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে যত চুক্তি হয়েছে সেটা প্রকাশ করার দাবি জানানো হয়েছে।
রামপালসহ বাংলাদেশের জন্য ক্ষতিকর যেসব চুক্তি রয়েছে সেগুলো বাতিল করার দাবি জানানো হয়েছে বলেও জানান আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রতি ভারতের যে অর্থনৈতিক নিপীড়ন, সাংস্কৃতিক আধিপত্য অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলানোর চেষ্টা, সেটা নিন্দা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে ভারতকে বাংলাদেশের প্রতি মর্যাদাশীল এবং সৎ প্রতিবেশী আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভারত বাংলাদেশ বিরোধী যে অপ্রচারণা চালাচ্ছে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব সম্প্রদায়ের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে। একইসঙ্গে যেকোনো উসকানির মুখে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, সবাই একটা কথা বলেছেন আমাদেরকে আর শক্তিহীন, দুর্বল, নতজানু ভাবার কোনো রকম অবকাশ নেই। যেকোনো ধরনের অপপ্রচারণ এবং উসকানির বিরুদ্ধে আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকব এবং আমাদের ঐক্য অটুট রাখব। আমরা সাজাগ থাকব ভবিষ্যতে যেকোনো প্রচারণা আসলে, উসকানি আসলে আমরা আমাদের ঐক্যকে আরও বেগবান রাখার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখব।
প্রস্তাব আকার এসেছে, গোটা জাতি ভারতের অপপ্রচার বিরুদ্ধে যে ঐক্যবদ্ধ আছে, সবাই মিলে একটা সমাবেশ করতে পারি কিনা, সবাই মিলে পলিটিক্যাল একটা কাউন্সিল করতে পারে কিনা, নিরাপত্তা কাউন্সিল করতে পারে কিনা—এজন্য প্রস্তাবনা হয়েছে। আমাদের মধ্যে মত, পথ, আদর্শের ভিন্নতা থাকবে, আমাদের রাজনৈতিক ভিন্নতা থাকবে, অবস্থার ভিন্নতা থাকবে, কিন্তু দেশ এবং সার্বভৌমত্ব এবং অস্তিত্বের প্রশ্নে আমরা সবাই এক।