সুপ্রিম কোর্ট খুলছে রোববার, নতুন বেঞ্চ গঠন
অবকাশকালীন ছুটি শেষে আগামীকাল রোববার (৫ জানুয়ারি) খুলছে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগ। আপিল বিভাগ ও হাইকোর্টের উভয় বিভাগে নতুন করে বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, আপিল বিভাগে একটি বেঞ্চ ও হাইকোর্ট বিভাগে ৫৩টি বেঞ্চ গঠন করা হয়েছে। তবে ১২ জন বিতর্কিত বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত জমার পরও এখনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ওইসব বিচারপতিদের বাদ দিয়ে মামলা শুনানির জন্য বেঞ্চ তৈরি করা হয়েছে।
এ ছাড়া নতুন বছরে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ কোম্পানি–সংক্রান্ত সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত (পেপার ফ্রি) বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু হতে যাচ্ছে। আগামীকাল হাইকোর্ট বিভাগের কোম্পানি–সংক্রান্ত একটি বেঞ্চে সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করা হবে। গত ২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট খোলার কথা থাকলেও উপদেষ্টা শেখ হাসান আরিফের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ওইদিন বন্ধ রাখা হয়।
দুর্নীতিগ্রস্ত বিচারকদের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের পাবলিক রিলেশন অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন বিচারপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়ম ও ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে কাজ করার অভিযোগের তদন্ত শেষ করেছেন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল। বিচারপতিদের তথ্যাবলি ও তাদের নিয়ে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। নিয়মানুযায়ী, রাষ্ট্রপতি এখন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবেন।
গত ১৬ অক্টোবর দুর্নীতি ও ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের দোসর হিসেবে কাজ করার অভিযোগ ওঠায় ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তাদের হাইকোর্টের বেঞ্চে বিচারকাজ পরিচালনার দায়িত্ব থেকে বিরত রাখা হয়।
১২ বিচারপতি হলেন- বিচারপতি নাইমা হায়দার, বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ, বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাস, বিচারপতি মোহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকার, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি আতাউর রহমান খান, বিচারপতি শাহেদ নূর উদ্দিন, বিচারপতি মো. আক্তারুজ্জামান, বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলাম, বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলন, বিচারপতি খিজির হায়াত ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান।
এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, নতুন বছরে নতুন উদ্যমে বিচার বিভাগের কার্যক্রম শুরু হবে। আইনজীবীদের পক্ষ থেকে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে বিচার বিভাগ ঘুষ, অবৈধ লেনদেনসহ সকল অনিয়ম দূর করে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে যাবে। পরিবেশ ও অর্থনৈতিক সাশ্রয়ের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম প্রস্তুত করে পেপার ফ্রি বিচারিক কার্যক্রম শুরু একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা। জনগণের হয়রানি কমানোসহ প্রয়োজনীয় সংস্কার করায় প্রধান বিচারপতিকে সাধুবাদ জানায়।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ঘোষিত প্রধান বিচারপতির রোডম্যাপে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের অর্থপূর্ণ সংস্কার নিশ্চিত করতে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বাধীন কাউন্সিল গঠন, অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়ন নীতিমালা প্রণয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।
দেশের উচ্চ আদালত ও জেলা আদালতগুলোর বিচারপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে ই-জুডিশিয়ারির আওতায় আনতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।