ভারতে এইচএমপি ভাইরাসের উপস্থিতি, হিলি স্থলবন্দরে নেই সতর্কতা
ভারতসহ বিশ্বের কয়েকটি দেশে দ্য হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস (এইচএমপিভি) ছড়িয়ে পড়লেও তা প্রতিরোধ হিলি চেকপোস্ট ও স্থলবন্দরে সতর্কতামূলক কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিদিন এই চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ও বাংলাদেশে যাতায়াত করছেন পাসপোর্টযাত্রীরা। আমদানি-রপ্তানি পণ্য নিয়ে ট্রাকচালক ও হেলপাররা দুই দেশে আসা-যাওয়া করছেন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন এইচএমপি ভাইরাস করোনার মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। এই ভাইরাসের উপসর্গগুলো হলো, জ্বর, কাশি, নাক বন্ধ থাকা, গলা ব্যথা এবং হাঁচি। এটি সাধারণ ফ্লুর মতো। শিশু ও যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন বয়স্ক মানুষ এই ভাইরাসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।
২০০১ সালে প্রথম নেদারল্যান্ডসে শনাক্ত হয়েছিল এই এইচএমপি ভাইরাস। ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে কাম্বোডিয়ায় শিশুদের মধ্যে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়। কয়েকদিন আগে ভারতে নতুন এই ভাইরাসটিতে দুই শিশু আক্রান্ত হয়েছে।
ভারতে যাওয়ার সময় হিলি চেকপোস্টে নওগাঁর পাসপার্টযাত্রী শ্যামল চন্দ্র বলেন, বিভিন্ন মাধ্যমে শুনছি করোনার মতোই নতুন একটি ভাইরাসের শনাক্ত হয়েছে। ভারতে কয়েকদিন আগে এই ভাইরাস পাওয়া গেছে। মনে আতঙ্ক থাকলেও কী আর করার আছে? চিকিৎসার জন্য যেতে হচ্ছে ভারতে। ডাক্তারের সিরিয়াল নেওয়া আছে। আবার যদি ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম বন্ধ হয় তাহলে চরম বিপদে পড়ব। তাই বাধ্য হয়েই যাওয়া?
হিলি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম জানান, সম্প্রতি এইচএমপি ভাইরাস সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এজন্য আগাম সতর্কতা হিসেবে হিলি চেকপোস্টের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতে চলাচল করা পাসপোর্টযাত্রীদের মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাতে কেউ ভারতে গিয়ে এই ভাইরাসে আক্রান্ত না হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ইলতুতমিশ আকন্দ জানান, এইচএমপি ভাইরাসটি সাধারণ ফ্লুর মতো। এর উপসর্গগুলো হলো, জ্বর, সর্দি-কাশি, নাক বন্ধ থাকা, গলা ব্যথা এবং হাঁচি। শিশু ও যাদের বয়স বেশি তাদের জন্য একটু সমস্যা। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। যেহেতু হিলি ইমিগ্রেশন ও পোর্ট এলাকা। এখান দিয়ে মানুষের যাতায়াতের পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল করে। বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। যথা সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, করোনা ভাইরাসে বিশ্বে মোট প্রায় এক কোটি ৪৯ লাখ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, আক্রান্ত হয়েছিল ৪০ কোটিরও বেশি। এ অবস্থায় জনসাধারণের মনে নতুন এ ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।