ঢাকা-না.গঞ্জ-টঙ্গী-কেরানীগঞ্জ-সাভার নিয়ে ‘ক্যাপিটাল সিটি সরকার’ গঠনের সুপারিশ
ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জ ও সাভার নিয়ে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির মতো ‘ক্যাপিটাল সিটি সরকার’ (রাজধানী মহানগর সরকার) গঠনের সুপারিশ করেছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন।
আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এ সংক্রান্ত সুপারিশ জমা দেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীসহ অন্য সদস্যরা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানী ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা ও পরিষেবার ব্যাপ্তির কথা বিবেচনায় রেখে নয়াদিল্লির মতো ফেডারেল সরকার নিয়ন্ত্রিত ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ বা ‘রাজধানী মহানগর সরকার’ (Capital City Government) গঠনের সুপারিশ করা হলো। অন্যান্য প্রদেশের মতোই এখানেও নির্বাচিত আইন সভা ও স্থানীয় সরকার থাকবে।
ঢাকা মহানগরী, টঙ্গী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও নারায়ণগঞ্জকে নিয়ে ‘ক্যাপিটাল সিটি গভর্নমেন্ট’ এর আয়তন নির্ধারণ করা যেতে পারে।
পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে যমুনার সামনে সংবাদ সম্মেলনেও এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার প্রতিবেদনে সারাদেশকে চারটি প্রদেশে ভাগ করা, ডিসিদের পদবি পরিবর্তন করার মতো আরও কিছু সুপারিশও করা হয়েছে।
প্রেস উইংয়ের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, উপসচিব পদে এখন যারা নিয়োগ পান তাদের ৭৫ শতাংশ পায় প্রশাসন ক্যাডার থেকে। এটা কমিয়ে ৫০ শতাংশে নামিয়ে আনার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি সুপেরিয়র সার্ভিসের জন্য আলাদা পরীক্ষার কথা বলা হয়েছে এবং সুপেরিয়র সার্ভিসের অন্তত ৫ শতাংশ চাকরি যাতে বাইরে থেকে নেওয়া যায়, এরকম একটা সুপারিশ সংস্কার কমিশন করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, আমাদের অনেক মেধাবি আছেন, যারা বিসিএস দেন না বা সরকারি চাকরিতে ক্যারিয়ারের শুরুতে যুক্ত হন না, পরবর্তী সময়ে জীবনে তারা তাদের মেধার স্বাক্ষর রাখেন। সরকার চাইলে যাতে এই ধরনের ব্যক্তিকে প্রশাসনে যুক্ত করতে পারে, এজন্য ৫ শতাংশ চাকরি প্রশাসনের বাইরে থেকে রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে পৃথক করে তিনটা আলাদা পাবলিক সার্ভিস কমিশন করার কথা বলা হয়েছে। একটা কমিশন সাধারণ যারা নিয়োগ পাবেন তাদের জন্য এবং আরেকটি শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারে যারা নিয়োগ পাবেন তাদের জন্য আলাদা আলাদা পাবলিক সার্ভিস কমিশন করার সুপারিশ করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর রাষ্ট্র সংস্কার উদ্যোগের অংশ হিসেবে গঠিত ১১ কমিশনের মধ্যে এ নিয়ে মোট ছয়টি কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিল।
এর আগে গত ১৫ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন দেয় নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পুলিশ এবং সংবিধান সংস্কারে গঠিত কমিশন।
আজ জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের পাশাপাশি বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান সাবেক বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমানও প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।