কফি চাষে সম্ভাবনা, প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাত নিয়ে কিছুটা দুশ্চিন্তা

উত্তরের কৃষিনির্ভর জেলা পঞ্চগড় চা উৎপাদনে দেশে দ্বিতীয়। চা, আখ, কমলা ও মাল্টার পাশাপাশি এখানে কফি চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ফলন ভালো হলেও কফি প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাত নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) পঞ্চগড় সদর উপজেলার কৃষক আবদুল হালিমের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমরা কফি চাষ করি, কিন্তু সঠিক দিকনির্দেশনার অভাবে উৎপাদিত কফি ঘরে পড়ে থাকে। যদি সরকার আমাদের সঠিক প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্থায় সহায়তা করে, তা হলে আমরা ভালো উপার্জন করতে পারব।’
আরেক কৃষক কটেক্স রায় বলেন, ‘কফির চারা রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে ফল আসে। বর্তমান বাজারে কফির চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে, কিন্তু অকার্যকর প্রক্রিয়াকরণের কারণে আমরা সেই বাজারে অংশ নিতে পারছি না। আমাদের কফি যদি সঠিকভাবে প্রক্রিয়াজাত করা হতো, তাহলে আমরা উচ্চমানের পণ্য বাজারজাত করতে সক্ষম হতাম।’
আরেক কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘কফি বাগান করতে আমাদের আলাদাভাবে জায়গা লাগে না। সাথি ফসল হিসেবে সুপারি বাগানে করা যায়। যদি প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়, তাহলে আমি বাগানের সংখ্যা আরও বাড়াব।’
জানা যায়, ২০২১ সালের শেষের দিকে কৃষি বিভাগের কফি ও কাজুবাদাম গবেষণা, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় জেলার তিন উপজেলায় রোবাস্টা জাতের কফি চাষ শুরু হয়। সুপারি, আমবাগানসহ বিভিন্ন বাগানের ছায়াযুক্ত ফাঁকা স্থানে ৪৭ জন কৃষক ১২ দশমিক ২৬ হেক্টর জমিতে এসব কফিবাগান গড়ে তুলেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান বিশ্বে কফির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে, যা বাংলাদেশের কৃষকদের জন্য বড় সুযোগ। অর্থনীতি সমৃদ্ধ করতেও ভূমিকা রাখতে পারে। বিভিন্ন দেশে কফি আমদানি করতে যে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হয়, তা এড়িয়ে স্বনির্ভরতার দিকে এগোনোর সুযোগ রয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্মকর্তা নইমুল হুদা সরকার বলেন, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে চারা, কীটনাশক, কারিগরি প্রশিক্ষণ সহায়তা ও পরামর্শ দিয়েছে। পঞ্চগড়ের আবহাওয়া কফি চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় কৃষকেরা লাভবান হবেন।