গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর ঐক্যের ওপর নির্ভর করছে কমিশনের সাফল্য : আলী রীয়াজ
গণতান্ত্রিক সমাজে মতপার্থক্য থাকবে, ভিন্নমতের চর্চাও হবে, তবে রাষ্ট্র বিনির্মাণে সবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে অভিন্ন লক্ষ্যে কাজ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ। গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর ঐক্যের ওপরই কমিশনের সফলতা নির্ভর করছে বলে মনে করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির আলোচনার শুরুতে এসব কথা বলেন আলী রীয়াজ।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনতার পরে এই প্রথম সবাই মিলে রাষ্ট্র বিনির্মাণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এটি সম্ভব হয়েছে অন্তত এক হাজার ৪০০ লোকের প্রাণের বিনিময়ে। যাদের প্রাণের বিনিময়ে এই সুযোগ তৈরি হয়েছে, তাদের কাছে আমাদের দায় আছে। এই দায় ও অঙ্গীকার থেকেই যেন আমরা সত্যিকার অর্থে রাষ্ট্র বিনির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু করতে পারি।’
এ সময় গণতান্ত্রিক সমাজে ভিন্ন ভিন্ন মতাদর্শের চর্চা হবে উল্লেখ করে আলী রীয়াজ আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক সমাজে মতপার্থক্য থাকবেই। আমাদের সবার ভাষা এক না-ও হতে পারে। কিন্তু আমাদের লক্ষ্য অভিন্ন।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই মিলে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে চাই। সে কারণে আমরা ঐক্যবদ্ধ আছি। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর ঐক্যের ওপর নির্ভর করছে আমরা কতটুকু সফলতা অর্জন করতে পারব।’
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল এ আলোচনায় অংশ নেন। এতে দলটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মুশতাক, মাহমুদ হোসেন ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাশিদা বেগম, সাইফুল ইসলাম ও শেখ মোহাম্মদ শিমুল উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়।
ইতোমধ্যে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ এ পর্যন্ত ২১টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় অংশ নিয়েছে।