ইতালীয় নাগরিক তাবেলা হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন

১০ বছর আগে রাজধানীর গুলশানে ইতালীয় নাগরিক ও নেদারল্যান্ডভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিসিও-বিডির কর্মকর্তা তাবেলা সিজার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও চারজনকে খালাস দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) দুপুরে ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শেখ ছামিদুল ইসলামের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— তামজিদ আহমেদ ওরফে রুবেল, রাসেল চৌধুরী, মিনহাজুল আরেফিন ওরফে ভাগনে রাসেল।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন— বিএনপি নেতা এম এ কাইয়ুম, তার ভাই আবদুল মতিন, শাখাওয়াত হোসেন ও সোহেল।
আসামিদের মধ্যে তামজিদ আহমেদ, রাসেল চৌধুরী, মিনহাজুল, মতিন ও শাখাওয়াত আদালতে বিভিন্ন সময়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন। চার্জশিটভুক্ত আসামি কাইয়ুম ও সোহেল মামলার বিচার চলাকালে পলাতক ছিলেন। মতিন জামিনে ও বাকি চার আসামি কারাগারে ছিলেন। কারাগারে থাকাদের রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে আদালতে উপস্থিত করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর গুলশানে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন তাবেলা। মামলার অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় গুলশান ৯০ নম্বর সড়কের পশ্চিম প্রান্তে গুলশান এভিনিউ সংলগ্ন গভর্নর হাউসের দক্ষিণের দেওয়াল ঘেঁষা ফুটপাতে দুর্বৃত্তরা তাবেলা সিজারকে গুলি করে।
ওই সময় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। এরপর ইসলামিক স্টেট (আইএস) দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় বলে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়।
ওই হত্যাকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইসিসিও কো-অপারেশনের বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি হেলেন দার বিক বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করা হয়।
২০১৬ সালের ২৮ জুন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার এম এ কাইয়ুমসহ সাত জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পরিদর্শক গোলাম রাব্বানী।
একই বছরে ২৪ আগস্ট তৎকালীন মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা অভিযোগপত্র (চার্জশিট) গ্রহণ করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, হামলাকারীদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল একজন শ্বেতাঙ্গকে হত্যা করে দেশ-বিদেশে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়া। দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে এই পরিকল্পনা করা হয়।