নতুন ১০ দলের কার্যক্রম তদন্তে ৩০ কর্মকর্তা নিয়োগ ইসির

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন পেতে আবেদন করা দলগুলোর মধ্যে বাছাইয়ে উত্তীর্ণ নতুন ১০টি দলের কার্যক্রম মাঠ পর্যায়ে পুনর্তদন্তের জন্য ১০ প্রশাসনিক অঞ্চলে ৩০ জন কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
সম্প্রতি ইসির জনবল ব্যবস্থাপনা শাখার সিনিয়র সহকারী সচিব মো. নাজমুল কবীরের স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি থেকে এই তথ্য জানা যায়।
চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশন এর আগে মাঠ পর্যায়ের কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা কর্মকর্তাগণের দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে মাঠ পর্যায় থেকে প্রাপ্ত প্রাথমিক তথ্য/মতামতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপূর্ণতা, যথাযথ মন্তব্যে ঘাটতি পায়। তাই যাচাই কমিটির সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে ১০টি দলের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অস্তিত্ব ও কার্যকারিতার বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করার নির্দেশনা প্রদান করে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, দলগুলোর জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অস্তিত্ব ও কার্যকারিতার বিষয়ে অধিকতর তদন্ত করার জন্য ১০টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ফরিদপুর, ঢাকা, রংপুর, কুমিল্লা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটিগুলোতে রাখা হয়েছে ৩০ জন কর্মকর্তাকে।
যে দলগুলোর কার্যক্রম পুনর্তদন্ত করা হবে সেগুলো হলো— আমজনতার দল, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি (বিজিপি), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), বাংলাদেশ জাস্টিস অ্যান্ড ডেভোলপমেন্ট পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ, জনতার দল, মৌলিক বাংলা, জনতা পার্টি বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টি।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ এ বিষয়ে বলেন, তদন্ত কার্যক্রমে সবকিছু ইতিবাচক থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে দাবি-আপত্তি চেয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে। তখন কোনো দাবি-আপত্তি এলে শুনানি করে তা নিষ্পত্তি করা হবে। আর দাবি-আপত্তি না থাকলে সংশ্লিষ্ট দলগুলোকে দেওয়া হবে নিবন্ধন সনদ।
নিবন্ধনের জন্য ১৪৩টি দল আবেদন করলেও প্রাথমিকভাবে কেউ উত্তীর্ণ না হওয়ায় সবাইকে সময় দেওয়া হয়। পুনর্বাছাই শেষে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হয়ে ১২১টি দলের আবেদন বাতিল হয়। পরে মাঠপর্যায়ে যাচাই করা ২২ দলের মধ্যে ৭টি বাদ পড়ে, ২টি দল (এনসিপি ও জাতীয় লীগ) নিবন্ধন পায়, ৩টি দলের বিষয় পর্যালোচনায় থাকে এবং বাকি ১০ দলের ওপর অধিকতর তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় ইসি।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধনের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটি, এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০ উপজেলা কমিটি এবং প্রতিটি কমিটিতে ২০০ ভোটারের সমর্থন থাকতে হয়। যাচাই ও দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তির পর সবকিছু ঠিক থাকলে দলগুলোকে নিবন্ধন সনদ দেয় নির্বাচন কমিশন।
বর্তমানে নিবন্ধিত দলের সংখ্যা ৫২টি (আওয়ামী লীগসহ)। নবম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে নিবন্ধন প্রথা চালু হয়। এ পর্যন্ত ৫৬টি দল ইসির নিবন্ধন পেলেও পরবর্তীতে শর্ত পূরণ, শর্ত প্রতিপালনে ব্যর্থতা এবং আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। দলগুলো হলো— বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, পিডিপি ও জাগপা। সম্প্রতি আদালতের আদেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাগপা নিবন্ধন ফিরে পেলেও ইসি কেবল জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিয়েছে।