‘শিশুর সুরক্ষায় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি একটি মাইলফলক’

সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, শিশুর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি একটি মাইলফলক উদ্যোগ। রোববার (১১ অক্টোবর) ঢাকার আজিমপুর স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় ‘জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দীর্ঘদিন পর এ ধরনের বৃহৎ পরিসরের টিকাদান ক্যাম্পেইন শুরু হওয়া জাতির জন্য একটি আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ। এ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।
সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা আরও জানান, সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শিশু, কিশোর-কিশোরী ক্লাব ও প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছেও এই টিকাদান কর্মসূচি পৌঁছে দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি ইপিআই কর্মসূচির আওতায় দেশব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন ২০২৫-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ১২ অক্টোবর থেকে শুরু হয়েছে জাতীয় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি। এর আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী সব শিশুকে বিনামূল্যে এক ডোজ টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) প্রদান করা হবে।
এটি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় একক টিকাদান ক্যাম্পেইন, যার মাধ্যমে প্রায় পাঁচ কোটি শিশুকে টিকা দেওয়া হবে। জন্মসনদ না থাকলেও শিশুরা টিকার সুবিধা পাবে-যাতে কোনো শিশুই টিকাদান থেকে বঞ্চিত না হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন একটি নিরাপদ, উন্নত ও কার্যকর টিকা, যা শরীরে প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। একটি মাত্র ডোজেই ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুরা ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত টাইফয়েড প্রতিরোধ করতে সক্ষম হবে, যা দীর্ঘস্থায়ী সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রথম ধাপে ১২ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের স্কুল, মাদ্রাসা ও সমমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা প্রদান করা হবে। দ্বিতীয় ধাপে ৩১ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী স্কুলবহির্ভূত শিশুদের বিভিন্ন স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে। শহরের ভাসমান ও পথশিশুদের টিকাদানে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা একযোগে কাজ করছে।
সরকারের লক্ষ্য চার কোটি ৯০ লাখ শিশুকে টিকা প্রদান করা। ইতোমধ্যে এক কোটি ৬৮ লাখ শিশুর নিবন্ধন সম্পন্ন হয়েছে। নিবন্ধনের পর টিকার সনদপত্র অনলাইনে সরাসরি ডাউনলোড করা যাবে।