মিথ্যা তথ্য দিয়ে জুলাইযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ পড়লেন যারা
মিথ্যা তথ্য দিয়ে গেজেটভুক্ত হওয়ায় মোট ১২৮ জন জুলাইযোদ্ধার তালিকা বাতিল করেছে সরকার। আজ বুধবার (২৯ অক্টোবর) এ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে তাদের গেজেট বাতিলের তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের প্রকাশিত গেজেট তালিকায় কিছু অসঙ্গতি পাওয়া যায়। অসঙ্গতিগুলোর মধ্যে রয়েছে—কিছু জুলাইযোদ্ধা আহত না হওয়া, আন্দোলনে সম্পৃক্ত থেকেও আহত না হওয়া এবং কয়েকজনের নামে একাধিক গেজেট প্রকাশিত হওয়া। জেলা কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার এসব গেজেট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিভাগভিত্তিক বাতিল করা জুলাইযোদ্ধার সংখ্যা হলো—চট্টগ্রাম বিভাগে ৩৯ জন, সিলেট বিভাগে ২৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ২১ জন, ঢাকা বিভাগে ১৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৩ জন, খুলনা বিভাগে ৯ জন, রংপুর বিভাগে তিনজন ও বরিশাল বিভাগে দুজন।
এর আগে গত ৩ আগস্ট শহীদদের তালিকা থেকে আটজনের নাম বাতিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রণালয়। এছাড়া, আহত নয় বা আন্দোলনে সম্পৃক্ত নয় এমন ১০৫ জনের গেজেট বাতিল প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে গেজেট বাতিল হওয়া জুলাইযোদ্ধাদের নাম, শ্রেণী এবং গেজেট নম্বর বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগের ২১ জন : নেত্রকোনা জেলার ২১ জনের মধ্যে রয়েছেন—সৈয়দ তরিকুল ইসলাম, মোহাম্মদ নুরুল আমিন, তানভীর আহমেদ, কাজী আবুল বাশার সুমন, রুহুল আমিন, মো. আমি হাসান রুপম, মোহাম্মদ আকিব তালুকদার, মো. সুজন মিয়া, মো. ইমন শাহারিয়া, আশরাফুল ইসলাম জাসাম, মো. মুশফিকুর রহমান, মো. সজিব, সোহাগ মিয়া, রুবেল মিয়া, মো. জসিম উদ্দিন, রাব্বি হাসান, মো. আজহারুল ইসলাম বিপ্লব, মো. আবু ফরিদ আহামেদ, আফরিনা জান্নাত, মাজহারুল ইসলাম এবং ময়মনসিংহ জেলার আবু নাঈম।
চট্টগ্রাম বিভাগের ৩৯ জন : এই বিভাগের বাতিল হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন চট্টগ্রাম জেলার—মো. সাগর, আবদুল্লাহ আল নোমান, নাঈম উদ্দীন সাইদ, মোহা. শরিফুল ইসলাম, শাহাদাত ইকরাজ তাহনি, তাহমিনা ইকরাম, মাহিবী তাজওয়ার, জসিম উদ্দিন, মো. আতিকুল ইসলাম, মো. ইয়াছিন, আরফাতুল ইসলাম, ফরহাদ আলম, মোহাম্মদ সাজ্জাদ কবির এমরান, মুনতাসিরুল হক চৌধুরী মামুর, পবন চন্দ্র নাথ, মিশকাত আলম রিয়াদ, মো. এমরান, মোহাম্মদ সাগর, নুরুল্লাহ, মোহাম্মদ রাফি, ফয়সাল মোহাম্মদ শিহাব, মোছা. ইছনিয়া আকতার, মো. মাঈনুদ্দীন, সাইমন, মো. আরিফ, রাসেল, রমজান আলী, মাহিম চৌধুরী ও রিফাত বিন আল। এছাড়া রয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলার মো. হাছান ও আবু জুহামুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মো. তানভির হোসেন, চাঁদপুর জেলার মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল নুর এবং নোয়াখালী জেলার শেখ মো. রাশেল, মো. জসিম উদ্দিন, মো. বেলায়েত হোসেন, মো. গিয়াস উদ্দিন, মো. নাজিম মিয়া ও মো. ইমাম হাসান।
বরিশাল বিভাগের ২ জন : পিরোজপুর জেলার আলী এবং বরিশাল জেলার নাঈম।
সিলেট বিভাগের ২৭ জন : মৌলভীবাজার জেলার ২১ জন হলেন—মো. আজমল আলী, নুর ইসলাম আহমেদ সুজন, মাহমুদুল হাসান, তামিম আহমদ, মিনহাজুর রহমান রিমন, দেলোয়ার আহমেদ সেলিম, মো. রিয়াদ মাহমুদ রকি, মো. আরিফুল ইসলাম, শেখ মো. মাহফুজুর রহমান মাহিন, জমির মিয়া, মো. রায়হান চৌধুরী, মো. রুমান আহমেদ, হুমায়ুন আহমদ, তানবির মিয়া, নবিবুর রহমান, জিসাম হোসেন রাহী, ইমাদ উদ্দিন আহমেদ, মো. আলী হোসেন, তারেকুল ইসলাম তারেক, মো. সুমন ও নাঈম আহমদ। এছাড়া সিলেট জেলার ফখরুল হাসান এবং সুনামগঞ্জ জেলার মো. রুহুল আমিন, মোফাজ্জল হোসেন, মো. আফতাব উদ্দিন, আল-হেলাল মো. ইকবাল মাহমুদ ও মো. মোবারক হোসেনের নাম বাতিল হয়েছে।
ঢাকা বিভাগের ১৪ জন : গাজীপুর জেলার রাসেল, জিহাদ, মো. শাহিন, মোছা. রুমি; টাঙ্গাইল জেলার খন্দকার রাজ, রাফিউল নাঈম, রাশিদুল ইসলাম অনিক, আব্দুল্লাহ আল রাহাত; নরসিংদী জেলার মো. মঞ্জুমুল আলম জিসান; মাদারীপুর জেলার মো. সাইফুল ইসলাম শুভ; মুন্সীগঞ্জ জেলার মুহাম্মদ রিয়াজুল হাসান ও বেলায়েত হোসেন শাহিন; রাজবাড়ী জেলার মজিবর মৃধা; কিশোরগঞ্জ জেলার মোঃ মাসুদুর রহমান এবং ঢাকা জেলার মো. মিরাজ শরীফ।
রাজশাহী বিভাগের ১৩ জন : পাবনা জেলার মো. সোহেল রানা; বগুড়া জেলার মো. সজিব আহমেদ, রশিদা ও নিরব কুমার দাস; রাজশাহী জেলার মো. মেহেদী হাসান অমি, মো. নাঈম উদ্দিন, মো. সাইফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, পলাশ ও মো. জাহিদ হাসান; সিরাজগঞ্জ জেলার শ্রী দিপ্ত কুমার, মো. আলামিন ও মো. মহিউদ্দিন সরকার।
খুলনা বিভাগের ৯ জন : কুষ্টিয়া জেলার মো. বদিউজ্জামান বাবুল, মো. ইয়াছিন আহমেদ পাভেল, মো. জিয়াউল মালিক, মাহাবুল হোসেন ও মো. জুয়েল আক্তার জয়; খুলনা জেলার মো. মিনারুল ইসলাম, মো. সোহেল, মো. মিন্টু হাওরাদার ও খালিদ শামস প্রান্ত।
রংপুর বিভাগের ৩ জন : দিনাজপুর জেলার মো. সুমন হোসেন, লালমনিরহাট জেলার মো. রাসিফুল ইসলাম প্রধান এবং ঠাকুরগাঁও জেলার সুমন রায়।
মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, যেসব জুলাইযোদ্ধা প্রতারণার মাধ্যমে তালিকাভুক্ত হয়েছেন এবং বেআইনিভাবে সরকারের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক