বদলগাছীতে কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত ৩
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলায় কুকুরের কামড়ে শিশুসহ তিনজন আহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করায় এখন যেন পুরো এলাকা থমথমে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার মডেল মসজিদ সংলগ্ন মা প্রসাধনী দোকানের সামনে রাসেল হোসেনের ছেলে রিয়াদ (৪) খেলা করছিল। হঠাৎ একটি কুকুর এসে তার পায়ে ও কানে কামড় দেয়। স্থানীয়রা দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এর কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল মোড়ে মৃত আলম উদ্দিনের ছেলে বৃদ্ধ কাশেম তার ভর্তি থাকা স্ত্রীর জন্য ওষুধ কিনতে আসেন। সে সময় কয়েকটি কুকুর তাকে আক্রমণ করে। তার হাত ও পায়ের কয়েকটি স্থানে রক্তাক্ত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মহিলা কলেজ গেটে পিন্ডিরা গ্রামের নুরল ইসলামের ছেলে আনিছুর রহমান টিউবওয়েলে হাত-পা ধোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ পিছন থেকে একটি কুকুর তার পায়ে কামড় দেয়। এই খবর দ্রুত উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। কেউ কেউ আহত ব্যক্তিদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চেয়েছেন।
আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে বদলগাছী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৌমিতা জলিল তিনজনকেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। তবে হাসপাতালে ভ্যাকসিন না থাকায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন : আজ থেকে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ
স্থানীয় বাসিন্দা নয়ন বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে কয়েকটি অসুস্থ (ঘা যুক্ত) কুকুর উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। কুকুর যে এলাকায় থাকছে, দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। কুকুরগুলো দেখতে একেবারেই ঘাউড়া। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েও কোনো সুফল পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে এটি বড় আকার ধারণ করতে পারে।
বদলগাছী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রিপা রানী বলেন, কয়েকদিন ধরেই অভিযোগ আসছিল। এই কাজগুলো স্থানীয় প্রশাসনের। আমাদের কাজ হলো যেকোনো প্রাণীকে চিকিৎসা দেওয়া, কোনো প্রাণীকে ধরা নয়। সুতরাং আমাদের কেউ ধরে এনে দিলে বা জানালে আমি আমার টিম কুকুরকে চিকিৎসা দিব। যারা এ বিষয়ে আমাকে বলেছে আমি একই কথা বলেছি।
উপজেলা পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা কানিজ ফারহানা বলেন, কুকুরকে ভ্যাকসিন দেওয়া আমাদের হেলথ্ (স্বাস্থ্য) বিভাগের কাজ নয়। আমাদের দায়িত্বে পড়ে না। কুকুরের কামড়ে আহতরা প্রতিরোধের টিকা পাননি কেনো জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপাতত আমাদের স্টোরে কোনো টিকা নেই। কার্যাদেশ পাঠানো আছে, দু-এক সপ্তাহের মধ্যে চলে আসবে।
আরও পড়ুন : সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সহজভাবে প্রকাশের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান সনি বলেন, মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে অসুস্থ কুকুরদের চিকিৎসার আওতায় আনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এটি চলমান থাকবে। যেহেতু কুকুর নিধন প্রাণী কল্যাণ আইন-২০১৯ অনুযায়ী নিষেধ। তাছাড়া কুকুরগুলো ধরাও বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ।

মিঠু হাসান, নওগাঁ (বদলগাছী-মহাদেবপুর)