দক্ষিণ কোরিয়ার গুয়াংজুতে এশিয়ান পারফর্মিং আর্টসে বাংলাদেশ
“যখন শিল্প সীমা অতিক্রম করে, ভাষা নীরব হয়ে যায়, থেকে যায় শুধু ছন্দ, সুর আর হৃদয়ের অনুরণন।”
এই চিরন্তন ভাবনাটিই জীবন্ত হয়ে উঠেছিল দক্ষিণ কোরিয়ার শহর গুয়াংজুতে, আন্তর্জাতিক উৎসব “সীমানার ওপারে: এশিয়ার পারফর্মিং আর্টসের নতুন ঢেউ ২০২৫”উপলক্ষে।
এই উৎসবটি ২ থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছিল কোরিয়ার সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ এশিয়া কালচার সেন্টারের (এসিসি) আয়োজনে; যা এশিয়ার সৃজনশীলতা ও বৈচিত্র্যের এক অনন্য উৎসব।
চারদিনব্যাপী এই বর্ণিল উৎসবে অংশ নেন এশিয়ার ১১টি দেশের শিল্পীরা অংশ নেন। দেশগুলো হলো জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, মঙ্গোলিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ।
নৃত্য, সংগীত ও নাটকের মাধ্যমে তারা প্রকাশ করেন এমন এক মানবিক ছন্দ, যা ভাষা ও ভূগোলকে অতিক্রম করে এক করে দেয় হৃদয়ের সুর।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অংশ নেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংস্কৃতি কর্মকর্তা সৈয়দা সাহেদা বেগম, যিনি উৎসবের পরিচালনা ও সৃজনশীল পরিকল্পনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া, এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি হাসান জাবেদ অংশ নেন এশিয়া কালচার সেন্টারের আমন্ত্রণে একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে।
বাংলাদেশের নৃত্যদল ‘কাথ্যাকিয়া’ তাদের ঐতিহ্যবাহী ছন্দ ও আধ্যাত্মিক নৃত্যের সমন্বয়ে পরিবেশন করে এক মোহময় পরিবেশনা, যা আন্তর্জাতিক দর্শকদের মুগ্ধ করে তোলে।
একজন কোরিয়ান দর্শক মন্তব্য করেন, “বাংলাদেশের পরিবেশনাটি আত্মাকে স্পর্শ করেছে— এটি যেন চলমান কবিতা।”
গুয়াংজুর ঐতিহাসিক ১৮ মে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের স্থানে নির্মিত এই ভবনটি শহরের মানবাধিকার আন্দোলনের ঐতিহ্যকে শ্রদ্ধার সঙ্গে ধারণ করে। শুধু পারফরম্যান্স নয়, এর লক্ষ্য হলো আন্তঃসাংস্কৃতিক বোঝাপড়া, গবেষণা ও সৃজনশীল সহযোগিতা বৃদ্ধি করা।
সাহিদা বেগম বলেন, “বাংলাদেশের শিল্পে আছে ঐতিহ্য আর উদ্ভাবনের মিশ্রণ। আন্তর্জাতিক মঞ্চে তা উপস্থাপন করা মানে বিশ্বের সামনে আমাদের সংস্কৃতির হৃদস্পন্দনকে পৌঁছে দেওয়া।”

বিশেষ প্রতিনিধি