অনূর্ধ্ব-২০ নারী দলের ফুটবলার তৃষ্ণা পেলেন জমি ও ঘর
বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ নারী ফুটবল দলের খেলোয়াড় তৃষ্ণা রাণীর পাশে দাঁড়ালেন পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী। মানবিক উদ্যোগে তিনি তৃষ্ণাকে উপহার হিসেবে দিয়েছেন বসতবাড়ির জন্য সাড়ে চার শতক জমি। সেই সঙ্গে আজ বুধবার (১২ নভেম্বর) থেকে তার জন্য আধাপাকা ঘর ও তার বাবার জন্য দোকানঘর নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
আজ বিকেলে ময়দানদীঘি ইউনিয়ন ভূমি অফিস সংলগ্ন এলাকায় জেলা প্রশাসক সাবেত আলী আনুষ্ঠানিকভাবে ঘর ও দোকানঘর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন এবং তৃষ্ণা রানী ও তার মা-বাবার হাতে জমির দলিল তুলে দেন।
নির্মাণকাজ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সুমন চন্দ্র দাস, বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশরাফুল ইসলাম, তৃষ্ণার কোচ মোফাজ্জল হোসেন বিপুলসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
জেলা প্রশাসক মো. সাবেত আলী বলেন, ‘তৃষ্ণা রানী বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সুনাম বয়ে আনছে। অথচ তাদের নিজস্ব কোনো থাকার জায়গা ছিল না—চাচার বাড়ির একটি ঘরে থাকত পরিবারটি। তার বাবা অসুস্থ, মা ইটভাটায় কাজ করেন। এমন কষ্টের মধ্যেও তৃষ্ণা দেশের সম্মান বাড়িয়েছে। তার স্বীকৃতি হিসেবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি রেজিস্ট্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং ঘর ও দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।’ জেলা প্রশাসক আরও বলেন, ‘আমরা চাই তৃষ্ণা যেন আরও বড় পরিসরে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে। জেলা প্রশাসন ও সরকার তার পাশে থাকবে সবসময়।’
টু স্টার বোদা উপজেলা ফুটবল একাডেমির পরিচালক ও তৃষ্ণার কোচ মোফাজ্জল হোসেন বিপুল বলেন, ‘তৃষ্ণা ছোটবেলা থেকেই অনেক কষ্ট করেছে। প্রতিকূলতা পেরিয়ে বোদা ফুটবল একাডেমিতে অনুশীলন করে আজ অনূর্ধ্ব–২০ নারী ফুটবল দলে জায়গা করে নিয়েছে। জেলা প্রশাসক তার পাশে দাঁড়িয়েছেন—এটা সত্যিই প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’
তৃষ্ণা রাণী আবেগভরা কণ্ঠে বলেন, ‘বহু কষ্টের পথ পেরিয়ে এখানে এসেছি। আগে যারা কটু কথা বলত, আজ তারাই উৎসাহ দিচ্ছে। জেলা প্রশাসক আমার পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন—এটা আমার জীবনের সবচেয়ে বড় পাওয়া। আমি পরিবারের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

ফাহিম হাসান, পঞ্চগড় (সদর-আটোয়ারী-বোদা)