দেশবাসীর কাছে হাদির জন্য জামায়াতে আমিরের দোয়া কামনা
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ওসমান হাদি শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হাদির শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবর নিতে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ছুটে যান বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। এসময় তিনি চিকিৎসকদের কাছ থেকে হাদির শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নিয়ে দেশবাসীর কাছে হাদির জন্য দোয়া কামনা করেন।
ঢাকা মেডিকেল থেকে বেরিয়ে আসার সময় গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, তফসিল ঘোষণার ঠিক পরেরদিন একজন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এবং জুলাই যোদ্ধাকে টার্গেট করে গুলি করার ঘটনা গভীর উদ্বেগের। এই জাতীয় ঘটনাকে কোনভাবেই ছোট করে দেখা যায় না, যাবে না।
অনতিবিলম্বে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে এবং এই ঘটনার পিছনের শক্তি কে বা কারা সেটি জাতির সামনে স্পষ্ট করতে হবে।
জামায়াতের আমিরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর নেতৃবৃন্দ।
শরিফ ওসমান হাদির মাথার ভেতরে গুলি আছে। গুলি বের করতে সার্জারি চলছে বলে জানান ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান জানান, হাদির অবস্থা ক্রিটিক্যাল (আশঙ্কাজনক)। তাঁকে ‘লাইফ সাপোর্ট’ দেওয়া হয়েছে। বুলেটটি (গুলিটি) তাঁর মাথার ভেতরে রয়েছে।
অপরদিকে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোস্তাক আহমেদ জানান, ওসমান হাদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার মাথার ভেতরে গুলি রয়েছে।
আজ দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদিকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, দুপুর ২টা ২৫ মিনিটের দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে দুর্বৃত্তরা এসে হাদিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।
গুলিবিদ্ধ হওয়ার সময় শরিফ ওসমান হাদির পেছনের রিকশায় ছিলেন মো. রাফি। তিনি ওসমান হাদির গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘জুমার নামাজ শেষে আমরা রিকশায় করে হাইকোর্টের দিকে আসছিলাম। বিজয়নগর আসতেই একটা মোটরসাইকেলে করে দুজন এসে হাদি ভাইয়ের ওপর গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।’
এদিকে ওসমান হাদি দুর্বৃত্তদের গুলিতে গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও ব্যাপক তদন্ত চালিয়ে হামলায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।
অপরদিকে ওসমান হাদিকে দেখতে হাসপাতালে যান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী মির্জা আব্বাস, এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসলিম জারা, দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান প্রমুখ।

নিজস্ব প্রতিবেদক