তারেক রহমানকে স্বাগত জানালেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা
দীর্ঘ ১৭ বছর প্রবাসে নির্বাসিত জীবন শেষে বাংলাদেশের মাটিতে পা রেখেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট সিলেটের ওসমানী বিমানবন্দর থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।
বিমানবন্দরে তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরা। বিমানবন্দরে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, গয়েশ্বর রায়, সালাহউদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনসহ উপস্থিত ছিলেন দলের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ নেতারা।
২০০৮ সাল থেকে লন্ডনে বসবাস করেন ৬০ বছর বয়সী তারেক রহমান। ২০০৯ সালে তিনি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হন। ২০১৮ সালে তার মা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাবন্দি হওয়ার পর তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করা হয়। তখন থেকেই তিনি বিদেশ থেকে দল পরিচালনা করছেন, ভার্চুয়ালি সভা ও সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। লন্ডন থেকে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করে গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি গণমানুষের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছেন।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে ২০০৭ সালের ৭ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয় তারেক রহমানকে। ১৮ মাস কারাগারে থাকার সময় অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হন তিনি। ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মুক্তি পান তারেক রহমান। এক সপ্তাহ পরে, ১১ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে পরিবারের সদস্যদেরকে সাথে নিয়ে ঢাকা ছেড়েছিলেন তিনি।
প্রবাসে থাকা অবস্থাতেই ২০১৫ সালে ছোট ভাই আরাফাত রহমান কোকোকে হারিয়েছেন। তার জানাজায়ও শরিক হওয়ার সুযোগ পাননি। মায়ের সান্নিধ্য থেকে বঞ্চিত ছিলেন দীর্ঘদিন।
দীর্ঘ ১৭ বছর পর তারেক রহমানের দেশে ফেরা দেশের এবং দলের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। বিএনপির নেতাদের মতে, তারেক রহমানের দীর্ঘ নির্বাসিত জীবন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ধারাবাহিক বার্তা তাকে সাধারণ মানুষের কাছে আলাদা করে তুলেছে। তার আগমন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য বাসভবন ও অফিস প্রস্তুত করেছে বিএনপি। রাজধানীর গুলশান এভিনিউর ১৯৬ নম্বর ভবনে উঠবেন তারেক রহমান। এই বাসার পাশেই ভাড়া করা বাসা ‘ফিরোজা’য় থাকেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
গুলশানের বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের জন্য আলাদা চেম্বারও তৈরি করা হয়েছে। নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও আলাদা চেম্বার তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া গুলশানে আরেকটি বাসা ভাড়া নেওয়া হয়েছে যেটি থেকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

নিজস্ব প্রতিবেদক