কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বড়দিন উদযাপন
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা আয়োজনে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘বড়দিন’ উদযাপিত হয়েছে। বড়দিন উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় ঝলমলে আলোকসজ্জা ও সাজসজ্জায় উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) উখিয়ার ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা, কাম্প ২৭ এবং কুতুপালং ইউএনএইচসিআর কুতুপালং ট্রানজিট সেন্টারে আয়োজিত বড়দিনের অনুষ্ঠানে অতিথি ও দর্শনার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। দুই দিনব্যাপী নানা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আয়োজনের মধ্য দিয়ে উৎসবটি উদযাপন করা হয়।
রেভা. পিটার সাইফুল রোহিঙ্গা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের একজন প্রতিনিধি ও বেথেল চার্চ রোহিঙ্গা খ্রিস্টান ফেলশিপ এর পালক হিসেবে বলেন, ক্যাম্প প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে কৃতজ্ঞতা জানাই, তাদের সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণভাবে বড়দিন উদযাপন সম্ভব হয়েছে। এই উৎসব কেবল একটি ধর্মীয় আয়োজন নয় বরং পারস্পরিক সম্মান, সহাবস্থান ও মানবিকতার একটি সুন্দর বার্তা বহন করে। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতেও সকল ধর্মাবলম্বীর জন্য একইভাবে নিরাপদ ও সহনশীল পরিবেশ বজায় থাকবে।
সূত্র জানায়, উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রায় ৫০০টি খ্রিস্টান পরিবার বসবাস করছে। তাঁরা প্রতিবছর নিয়মিতভাবে বড়দিন পালন করে থাকেন। এ বছরও দুই দিনব্যাপী শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর পরিবেশে বড়দিনের আয়োজন করা হয়েছে।
নিরাপত্তা বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক সিরাজুল কবির বলেন, বড়দিন উপলক্ষে ক্যাম্পে যাতে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি না থাকে, সে জন্য আমরা সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। সবাই যেন নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারে—সে লক্ষ্যেই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের আওতাধীন ১৩ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ক্যাম্প-ইন-চার্জ আল ইমরান বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত সব ধর্মাবলম্বীর ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বড়দিন উপলক্ষে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
আল ইমরান আরো বলেন, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের মাধ্যমে ক্যাম্পে সকল ধর্মীয় উৎসব উদযাপনের পরিবেশ বজায় রাখতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।

নোমান অরুপ, কক্সবাজার (টেকনাফ)