লাখপতির গল্প
প্রাকৃতিক পাথরের গয়না বেচে লাখপতি ঢাকার সুজানা

জুয়েলারি ডিজাইনিং, ম্যাটেরিয়াল সিলেকশন, কালেকশন—এসব নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় কাটছে তাঁর। সামনে বড় বড় উৎসব। সব প্রস্তুতি এখন থেকেই নিতে হচ্ছে। বলছি উদ্যোক্তা সুজানা আহমেদের কথা, যিনি প্রাকৃতিক পাথরের তৈরি গয়না বেচে বেশ সাড়া ফেলেছেন। বনে গেছেন লাখপতি।
সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় সুজানা আহমেদের। জানান তাঁর উদ্যোক্তা-জীবনের গল্প। মুক্তা, প্রাকৃতিক ও খনিজ পাথরের গয়না নিয়ে কাজ করছেন। বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে।
সুজানা আহমেদ পার্ল রিগালিয়া বাই জিলের প্রতিষ্ঠাতা। তো, কত দিন ধরে কাজ করছেন? বলেন, ‘আমি কাজ করছি ঢাকা থেকে। এই কাজের সঙ্গে ছিলাম আগেই, কিন্তু উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরামে (উই) যুক্ত হওয়ার পর কাজ করছি ছয় মাস। আলহামদুলিল্লাহ, নতুন হিসেবে বেশ ভালো এবং পজিটিভ রেসপন্স পাচ্ছি। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই আমার ডিজাইনকৃত নেকলেস কিনুক না কিনুক, পছন্দ করছেন।’

উদ্যোক্তা হতে পেরে কেমন লাগছে আর অনুপ্রেরণাই বা কারা ছিল? এমন প্রশ্নের জবাবে সুজানা আহমেদ বলেন, ‘এই অনুভূতি বলে বোঝানো যাবে না। আমি স্বনির্ভর হয়েছি আজ থেকে ১৩ বছর আগে। কিন্তু উদ্যোক্তা হওয়ার অনুভূতি অন্যরকম। অনুপ্রেরণা হিসেবে সব সময়ই ছিলেন আমার বাবা। তিনি আজ বেঁচে নেই, থাকলে অনেক খুশি হতেন। উই-এ জয়েন করার পর আমার মায়ের অনুপ্রেরণায় আবার নতুনভাবে শুরু করা, এই করোনাকালে। দু-তিন জন আছেন, যাঁদের নাম না নিলেই নয় আমার সফলতার জন্য। তাঁরা হলেন আমার চাচাতো বোন ইউকি, আমার সহকর্মী বড় বোন শম্পা আপু, পরম বন্ধু মাহীন ও নিশি।’
পরিবার থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন? সুজানার উত্তর, ‘পরিবারই সব উৎসাহের মূলে। আমার মা, আমার ১০ বছরের ছেলে। আত্মীয়-স্বজনেরাও খুব উৎসাহিত এখন।’

সুজানার সাফল্যের গল্পে উই-এর ভূমিকা অনেক। তাঁর ভাষ্যে, ‘উই নারীর জীবন বদলে দিতে যে অমূল্য ভূমিকা রাখছে, তা বলে শেষ করা যাবে না। নারীদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলা থেকে শুরু করে সবার কাছে তুলে ধরা, উপস্থাপন করা, সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, শিক্ষা প্রদান করা, পথ প্রদর্শন করা; সবই করে দিচ্ছে উই। সে জন্য নাসিমা আক্তার নিশা আপুকে ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করতে চাই না। উই-এর ফেসবুক গ্রুপ আমাদের আত্মবিশ্বাসী হতে শেখায়, কিছু করার উৎসাহ জোগায়। শুধু তা-ই নয়, করার সুযোগও তৈরি করে।’
সুজানার মতে একজন উদ্যোক্তার গুণ, ‘প্রথম কথা হচ্ছে স্বপ্ন দেখতে হবে। সেই স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে আত্মবিশ্বাস, একাগ্রতা, নিয়মানুবর্তিতা, ক্রিয়েটিভিটি, নলেজ, রিস্ক টেকিং অ্যাবিলিটি থাকতে হবে।’
বলা হয়, অনেকে লাখপতি? সুজানা হতে পেরেছেন? তাঁর উত্তর, ‘জি, আলহামদুলিল্লাহ হয়েছি। অন্যদের বলব একাগ্রচিত্তে, আত্মবিশ্বাস রেখে, পরিশ্রম করে যেতে হবে। সাফল্য আসবেই।’
পার্ল রিগালিয়া বাই জিল একটি ফ্যাশন ব্র্যান্ড হোক, সেই স্বপ্ন সুজানা আহমেদের। আগামীতে শুধু গয়না নয়, পোশাক—বিশেষ করে শাড়ি নিয়ে কাজ করতে চান এ উদ্যোক্তা।