চরাঞ্চলে জামানত ছাড়াই ঋণ দিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক
চর ও হাওড়াঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নয়নে আর্থিক সেবা দিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক। তাদেরকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে বিনা জামানতে ঋণ বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া ১০ টাকার বিনিময়ে অ্যাকাউন্ট খুলে বিনাখরচে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা দিচ্ছে এনআরবিসি ব্যাংক।
গতকাল শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) গাইবান্ধায় আনুষ্ঠানিকভাবে ১৬ জন ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তার হাতে প্রকাশ্যে ঋণের চেক তুলে দেওয়া হয়। ঋণ বিতরণের সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক (গ্রেড—১) আবুল বশর, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল, মাইক্রো ফাইন্যান্স ইউনিটের প্রধান মো. রমজান আলী ভূঁইয়া, কেয়ার বাংলাদেশের সৌহার্দ্য প্রকল্পের চেয়ারম্যান মার্ক নসবাক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঋণগ্রহীতারা হলেন- মনিকা রাণী, মিনা বেগম, ফানসী বেগম, ফাতেমা বেগম, লাভলী, সুমী, মোসলেমা বেগম, চম্পা বেগম, শাকিলা আক্তার, মাসুদা বেগম, আসমা বেগম, রোশনা বেগম, জহুরা বেগম, জান্নাতুন বেগম, মুক্তা বেগম, রোসনা খাতুন প্রমুখ। প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে ঋণ দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আবুল বশর বলেন, জাতীয় নীতি কৌশল অনুসারে ২০২৬ সালের মধ্যে দেশের সকল মানুষকে আর্থিক সেবার আওতায় আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এজন্য কোন জটিলতা ছাড়াই ১০ টাকায় অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রায় ১ কোটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। প্রান্তিক এলাকায় ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ, বিনা জামানতে ঋণ প্রদানে এনআরবিসি ব্যাংকের কার্যক্রম প্রশংসনীয়। এনআরবিসি ব্যাংক প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের উন্নয়ন ও গ্রামমুখী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। গ্রামের উন্নয়নে, নারীদের উন্নয়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের তহবিল রয়েছে। এসব তহবিল থেকে ঋণ বিতরণের জন্য সকল ব্যাংকের সুযোগ রয়েছে। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষদেরকে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকাণ্ডের আওতায় আনতে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।
এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পারভেজ তমাল বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করছে। মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে অ্যাকাউন্ট খুলে সব ধরনের ব্যাংকিং সেবা দেওয়া হচ্ছে। গ্রামের প্রান্তিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য বিনাজামানতে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে সারা দেশের ৮৮ হাজার ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাকে ঋণ প্রদান করেছেন জানিয়ে পারভেজ তমাল বলেন, এনআরবিসি ব্যাংক প্রতিনিয়ত মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে সেবাবঞ্চিতদের ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসছে।
কেয়ার বাংলাদেশের মার্ক নসবাক বলেন, গ্রামের উন্নয়ন করতে হলে নারীদের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। আর্থিক সংযোগ ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি আরও সহজ করতে হবে। মধ্যম আয়ের বাংলাদেশ হতে হলে ব্যাংকগুলোকে আরও গ্রামমুখী হওয়া প্রয়োজন। এনআরবিসি ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকাণ্ড গ্রামের মানুষদের সঞ্চয় করা এবং আয়বৃদ্ধিমূলক কাজে সহযোগিতা করছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মকাণ্ডের আওতায় এনআরবিসি ব্যাংক দেশের প্রত্যন্ত হাওড় ও চরাঞ্চলের হতদরিদ্র মানুষদেরকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসছে। মাত্র ১০ টাকার বিনিময়ে অ্যাকাউন্ট খোলার সুযোগ পাচ্ছেন এসব অঞ্চলের হতদরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষেরা। বিনা খরচে এসব অ্যাকাউন্টে অর্থ সঞ্চয় ও ঋণ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১ হাজার ৩০০ মানুষ ব্যাংকে ৩৯ কোটি টাকা সঞ্চয় করেছেন। পাশাপাশি ১০৫ জন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা সাড়ে ৫২ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন।
উল্লেখ্য, কেয়ার বাংলাদেশের সৌহার্দ্য কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের নিয়ে গাইবান্ধায় দিনব্যাপী উদযাপন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এতে এনআরবিসি ব্যাংকসহ চারটি ব্যাংক স্টল স্থাপন করে এবং গ্রাহকদের মাঝে প্রকাশ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়।