বাজেটে খাত নির্বাচনে ত্রুটি থাকতে পারে : মসিউর রহমান
বাজেটে সহায়তার জন্য খাত নির্বাচনের ত্রুটি থাকতে পারে, এটা কেউ অস্বীকার করে না জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, আমাদের বাজেটের সব লক্ষ্য পূরণ হবে না। কিছু হবে। কিছু হবে না। যেটুকু হবে না সেগুলো পরবর্তী সময়ে যেন হয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) আয়োজিত বাজেট পরবর্তী আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মসিউর রহমান এসব কথা বলেন।
মসিউর রহমান বলেন, মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য আমাদের খাদ্যের উপর শুল্ককর সবসময় কম থাকে। বর্তমানে এটা শূন্য হতে পারে। আবার আরো নমনীয়ও হতে পারে। যাতে খাবারের দাম না বাড়ে।
প্রস্তাবিত বাজেট মূলত তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে করা হয়েছে জানিয়ে মসিউর রহমান বলেন, একটি সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, ঋণ ব্যবস্থাপনা এবং মধ্যমেয়াদি আর্থিক পরিকল্পনা। এসবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ করে বাজেট তৈরি হয়। কিন্তু সেখানে ধরে নেওয়া হচ্ছে, আমাদের সব লক্ষ্য পূরণ হবে না। কিছু হবে। কিছু হবে না। যেটুকু হবে না সেগুলো পরবর্তী সময়ে যেন হয়।
সরকারের বাজেট প্রণয়নের সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে মন্তব্য করে ড. মসিউর রহমান বলেন, সে সক্ষমতা কতটুকু স্বচ্ছ হচ্ছে বা কতটুকু সমস্যাকে বুঝতে পেরেছে, সেটা প্রশ্ন থেকে যায়। অনেক সময় বরাদ্দ ও ভর্তুকির মতো ব্যয়গুলো সঠিকভাবে নির্বাচিত হয় না জানিয়ে তিনি বলেন, যে কারণে যেমন ফল আমরা চাই, তেমন পাওয়া যায় না। বাজেটে সহায়তার জন্য খাত নির্বাচনের ত্রুটি থাকতে পারে, এটা কেউ অস্বীকার করে না।
নিত্যপণ্যে শূন্য ট্যারিফ ও অগ্রিম আয়কর (এআইটি) দরকার জানিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেন, নিত্যপণ্যে আরও নমনীয় হতে হবে। এসবের দাম এতো কেন বাড়ে সেটা কিন্তু রহস্যময় বিষয়। সেটার সদুত্তর পাওয়া দরকার। মার্কেট পলিসি নাকি অন্য কোন কারণে এটা হচ্ছে দেখা জরুরি।
ব্যবসা-বাণিজ্যের যে ব্যস্তবতা তার সঙ্গে এ বাজেটের কোনো মিল নেই জানিয়ে প্যানেল আলোচনায় বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক শামস মাহমুদ বলেন, আমাদের পোশাক রপ্তানি এক অংকে নেমেছে, সেটা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পরে পোশাক খাতে যেসব সমস্যা হবে সেটা নিয়ে কিছু নেই। গ্রিন এনার্জি আর বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে বলা হচ্ছে কিন্তু সেটার কোনও পরিকল্পনা নেই।
বছরের পর বছর বিভিন্ন খাতের বরাদ্দ একই থাকছে জানিয়ে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বাজেটে বলা হলেও অগ্রাধিকার খাতগুলোতে কোন বরাদ্দ থাকছে না। বাজেটের মূল বরাদ্দ মোটাদাগে প্রতি বছর একইভাবে বেতনভাতা দিতে চলে যাচ্ছে। উন্নয়ন খাতে ব্যয় করা হচ্ছে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে।