অবশেষে অনশন ভাঙলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা
বরেণ্য কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে অনশন ভাঙলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীরা। অনশন ভাঙলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের হাতে আট দিন পর অনশন ভাঙেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে ১০টায় হাসপাতালে থাকা অনশনরতরা ক্যাম্পাসে ফেরেন।
ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের সঙ্গে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক ইয়াসমিন হক। তাঁরা দুজনই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন, এবং ২০১৯ সালে অবসরে যান।
বুধবার ভোর ৩টা ৫৫ মিনিটে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও অধ্যাপক ইয়াসমিন হক শাবি ক্যাম্পাসে এসে পৌঁছান। ক্যাম্পাসে ঢুকেই তাঁরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ফটক থেকে পায়ে হেঁটে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করেন।
বুধবার সকালে ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হক অনশনরত শিক্ষার্থীদের বলেন, ‘আজ উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আমার বাসায় আলোচনা হয়েছে। তাঁরা বাসায় এসেছিল। তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তোমরা যা চাইছো, যে দাবি তোমাদের সেটা পূরণ হবে।’
ড. জাফর ইকবাল বলেন, ‘তোমাদের ওসিলায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ঠিক হবে।’
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. জাফর ইকবাল বলেন, ‘তাঁদের (উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের) সঙ্গে আলোচনার পর আমরা দেরি করিনি, সরাসরি এখানে চলে এসেছি। আমরা তোমাদের অনশন না ভাঙিয়ে যাব না।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে থাকা শিক্ষার্থীসহ সকল অনশনরতদের একত্র করে সকাল ৮টায় অনশন ভাঙার সম্মতি জানান।
গত ১৭ জানুয়ারি থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে তাঁর পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন করছেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার থেকে একই স্থানে অনশন শুরু করেন ২৪ শিক্ষার্থী। বাসভবনের সামনে অবস্থানের কারণে গত ১৭ জানুয়ারি থেকেই অবরুদ্ধ অবস্থায় আছেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।
এর আগে গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়টির বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ ছাত্রী। একপর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালায়। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে এবং তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।