ঢাবির ল্যাবে করোনা শনাক্ত ‘৪০ মিনিটে’
নভেল করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ পরীক্ষা পদ্ধতিতে সফলতা অর্জনের দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় নিয়োজিত একদল শিক্ষক। তাঁদের দাবি, ৪০ মিনিটেই করোনাভাইরাস শনাক্তকরণ সম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জেবা ইসলাম সেরাজের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট গবেষকরা এ পরীক্ষা পদ্ধতিতে সফলতা পেয়েছেন।
তাঁদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করে সার্স কোভ-২ (নভেল করোনাভাইরাস) আরএনএ ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্তকরণে গবেষকরা র্যাপিড কালারোমেট্রিক টেস্টের প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছেন, যেটি আরটি-ল্যাম্প টেস্ট কিট নামে বহুল প্রচলিত।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই আরটি-ল্যাম্প টেস্ট পরীক্ষা পদ্ধতি কোভিড-১৯ রোগীদের দ্রুত শনাক্তকরণ এবং তাদের দ্রুত পৃথকীকরণ করতে সাহায্য করে। এটি অত্যন্ত সহজ একটি ডায়াগনোসিস পদ্ধতি, যা দেশের প্রবেশ পথগুলোতে এবং উপজেলা পর্যায়ে খুব সহজেই প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব।
এই কিটটি আমেরিকান মলিকিউলার বায়োলজি রিএজেন্ট এবং কিট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান নিউ ইংল্যান্ড বায়োল্যাবস দ্বারা উৎপাদিত এবং বাংলাদেশে ‘বায়োটেক কনসার্ন’ এর একমাত্র পরিবেশক।
ইতোমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ এবং ‘বায়োটেক কনসার্ন’ যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) এই পরীক্ষাটির কার্যকারিতা পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছে। পরবর্তী সময়ে ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন বোর্ডে অনুমতির জন্য আবেদন করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে অধ্যাপক জেবা ইসলাম বলেন, এটি যেকোনো আরএনএ অথবা ডিএনএ শনাক্তকরণ কিট। এটি কোভিড-১৯ শনাক্তকরণে প্রথম ব্যবহার করা হয়েছে চীনের উহানে, পরে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার ল্যাবরেটরিতে। তিনি বলেন, এই টেস্টের সুবিধা হচ্ছে, এটি ৪০ মিনিটে সম্পন্ন করা যায়। এজন্য একটা সিম্পল ইনকিউবেটরের দরকার হয়, যাতে পিসিআর মেশিনের মতো জটিল যন্ত্র লাগে না। আর তৃতীয় সুবিধাটি হচ্ছে কালার রিয়্যাকশন। নেগেটিভ স্যাম্পলের ক্ষেত্রে গোলাপি রঙ এবং পজিটিভ স্যাম্পলের ক্ষেত্রে হলুদ রঙ প্রদর্শন করে।
এসব কারণেই এ টেস্ট অনেক সুলভ মূল্যে সম্পন্ন করা যাবে বলেও জানান তিনি। বলেন, এখন যেমন হাসপাতালে টেস্ট করতে তিন হাজার টাকার মতো লাগে, যেখানে আরটি-ল্যাম্প টেস্ট পদ্ধতিতে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যেই পরীক্ষা সম্পন্ন করা যাবে।