রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে অনশনে ছাত্রের আত্মহত্যার চেষ্টা
সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আমরণ অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই শামীম হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
আজ রোববার দুপুরে একাডেমিক ভবনের সামনে অনশনস্থলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী আর সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে হ্যান্ডমাইকে কথা বলার সময় বিষপানের চেষ্টা করেন শামীম হোসেন।
শামীম হোসেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
এর আগে গত শনিবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে শামীম ঘোষণা দিয়েছিলেন, ওই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে স্থায়ীভাবে অপসারণ না করার বিষয়ে রোববার দুপুর ১২টার মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষ না নিলে তিনি একাডেমিক ভবনের সামনেই আত্মহত্যা করবেন।
শামীমের সহপাঠী জাহিদুল ইসলাম সিরাজ বলেন, শিক্ষিকা ফারহানা ইয়াসমিনকে স্থায়ী বহিস্কার না করায় শামীম আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন।
সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের ১৬ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দেওয়ার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান রবীন্দ্র অধ্যায়ন বিভাগের চেয়ারম্যান লায়লা ফেরদৌস হিমেল জানান, শামীম হোসনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে শামীমের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের একটি অংশ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ-পাবনা-নগরবাড়ি মহাসড়কের বিসিক মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। তাদের অবরোধের কারণে ঘণ্টাখানেক দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে অবরোধ তুলে নিলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যায়ন বিভাগের ১৬ শিক্ষার্থীর মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠে ওই বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা বর্জন করে একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনে তাল ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ করেন।
ওই দিন রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান, সহকারী প্রক্টর ও সিন্ডিকেট সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন ফারহানা বাতেন।
ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠিত হয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে সিন্ডিকেট সভা শেষে শিক্ষক ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
গত ২২ অক্টোবর তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট ফারহানা ইয়াসমিন বাতেনকে স্থায়ীভাবে অপসারণের সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় শনিবার থেকে শিক্ষার্থীরা আবারও আন্দোলন শুরু করে।